লিবিয়ায় পাচারকারীদের গুলিতে নিহতদের আটজন ভৈরবের

by

লিবিয়ার দক্ষিনণাঞ্চলীয় শহর মিজদাহতে কমপক্ষে ২৬ জন বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে পাচারকারীরা জিম্মি করে গুলি করে হত্যা করে, সেখানে আরো ১১ বাংলাদেশি মারাত্মক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৮ জনের বাড়ি ভৈরবের বিভিন্ন গ্রামে বলে জানা গেছে। তাদের সবার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বিভিন্ন সময়ে দালালের মাধ্যমে ইউরোপের ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যের লিবিয়ায় পাড়ি জমান তারা।

লিবিয়ায় বেনগাজী থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে কাজের সন্ধানে যাচ্ছিলেন তারা। সে পথে মানব পাচারকারীরা তাদের জিম্মি করে। ঘটনাস্থল ত্রিপলি শহর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে। মানবপাচারকারীরা মোট ৩৮ জনকে জড়ো করে। উদ্দেশ্য তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে, অপহৃতদের রাজধানী ত্রিপলিতে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে দ্রুত মুক্তিপণ আদায়ের জন্যে মিজদাহ শহরে নিয়েই শুরু হয় বর্বর নির্যাতন। পরে জিম্মিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই অন্তত ২৬ বাংলাদেশি নিহত হয়। এর মধ্যে ৮ জনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব বলে খবর পাওয়া গেছে।

ভৈরব থানা সূত্রে জানা যায়, লিবিয়ার অবস্থানরত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৮ জন যুবকের সন্ধান মিলছে না। তাদের মধ্যে সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন আকাশ (২৬) বাবা মেহের আলী, একই ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামের সোহাগ আহমেদ (১৯) বাবা আব্দুল আলী, আকবর নগর গ্রামের মাহাবুব হোসেন (২৬) বাবা জিন্নত আলী, শ্রীনগর গ্রামের সাকিব হোসেন (২০) বাবা বাচ্চু মেলিটারি, শম্ভুপুর বড় কান্দার জানু মিয়া (২৭) বাবা আ. সাত্তার, একই গ্রামের মামুন মিয়া (২১) বাবা লিয়াকত মিয়া, একই এলাকার সাদ্দাম মিয়া (২০) বাবার নাম জানা যায়নি ও শম্ভুপুরে মোকশেদ আলীর পুত্র মোহাম্মদ আলী (২২) বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, লিবিয়া অবস্থানরত ভৈরবের আরো আনেক পরিবারের সঙ্গে প্রবাসী যুবকদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভৈরবের নিখোঁজের তালিকা আরো দীর্ঘ হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে নিখোঁজদের এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

ভৈরব থানার ওসি (তদন্ত) বাহালুল খান বাহার জানান, উপজেলা থেকে দালালের মাধ্যমে অবৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে না যাওয়ার জন্য আমাদের প্রচারণার চালানো পরেও দালালদের প্রলোভনে যুবকদের অবৈধ পথে লিবিয়াকে ব্যবহার করছে। বৃহস্পতিবারের গোলাগুলিতে নিহতের কোনো তালিকা আমাদের কাছে আসে নাই। তবে ভৈরবের লিবিয়ায় অবস্থানরত নিখোঁজ পরিবারের তথ্যের ভিত্তিতে ৮ জনের একটি তালিকা আমরা করেছি।