ভারতে বিমান ওঠা-নামায় সমস্যা করতে পারে পঙ্গপালের ঝাঁক

by

ভারতের উত্তর ও পশ্চিম অংশের কিছু রাজ্যে উত্‍পাত শুরু করেছে পঙ্গপালের ঝাঁক। মাঝেমধ্যেই মেঘের মতো আস্তরণ তৈরি করে লোকালয় কিংবা জমিতে চলে আসছে তারা। ফলে ফসল নষ্ট থেকে শুরু করে মানুষের বাইরে বের হতেও সমস্যা হচ্ছে। এই পঙ্গপালের ঝাঁকের ফলে বিমান ওঠা- নামা করতে সমস্যা হতে পারে বলে সতর্ক করল ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। 

শুক্রবার ডিজিসিএ’র পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে একথা বলা হয়েছে। পঙ্গপালের ফলে বিমানের কী কী অসুবিধা হতে পারে তাও বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে এই নির্দেশিকায়। সাধারণত এই পঙ্গপালের ঝাঁক বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরেই দেখা যায়। খুব বেশি উঁচুতে তারা ওড়ে না। তার ফলে বিমানের টেক অফ বা ল্যান্ডিংয়ের সময় সমস্যা হতে পারে, এমনটাই জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়। যদি পঙ্গপালের ঝাঁক বিমানের কোনো যন্ত্রাংশের ভিতর ঢুকে যায় তাহলে সেই যন্ত্রাংশ যেমন, ইঞ্জিন খারাপ হতে যেতে পারে। এছাড়াও এই পঙ্গপাল বিমানের সেন্সর ব্যবস্থাও খারাপ করে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে বিমানের উচ্চতা বা গতি ভুল দেখাতে পারে। এতে বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডিজিসিএ জানিয়েছে, একটা পঙ্গপাল ছোট হলেও পঙ্গপালের ঝাঁক খুব ক্ষতিকর। অনেক সময় এরা বিমানের ককপিটের উইন্ড স্ক্রিনে আটকে যায়। ফলে পাইলটের দেখতে সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে পাইলটরা সাধারণত ওয়াইপার ব্যবহার করে স্ক্রিন পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে স্ক্রিন আরো ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। তাই এই ধরনের ঘটনায় ওয়াইপার ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পাইলটদের। এছাড়া পঙ্গপালের ঝাঁকের ফলে রানওয়ে দেখার ক্ষেত্রে পাইলটদের সমস্যা হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। 

এই সমস্যা দূর করার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে ডিজিসিএ। বলা হয়েছে, বিমান টেক অফ বা ল্যান্ডিংয়ের সময় আশেপাশে কোথাও পঙ্গপালের ঝাঁক আছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরের কর্মীদের খেয়াল রাখতে হবে। থাকলে তা সঙ্গে সঙ্গে পাইলটকে জানাতে হবে। দরকার পড়লে কিছুক্ষণ পরে টেক অফ বা ল্যান্ডিং করতে হবে। এছাড়া রাতের বেলায় পঙ্গপাল ওড়ে না। তাই রাতে বেশিরভাগ বিমান আপাতত চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

বর্তমানে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও দিল্লিতে সবথেকে বেশি উত্‍পাত করছে পঙ্গপাল। এরই মধ্যে ৫০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তাই বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসনের পক্ষে ট্র্যাক্টর, গাড়ি ও ড্রোনের সাহায্যে পঙ্গপালের ঝাঁকের ওপর জীবাণুনাশক স্প্রে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও উত্‍পাত কমছে না।