যৌতুক না পেয়ে শ্বশুরের ২ বিঘা জমির কলা গাছ কর্তন!

by

নরসিংদীর মনোহরদীতে যৌতুক না পেয়ে শ্বশুর বাড়ির দুই বিঘা জমির কলাবাগান কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার শুকুন্দী ইউনিয়নের দিঘাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বকুল মিয়া। তিনি ওই গ্রামের মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। অভিযুক্ত মেয়ের জামাই মাহমুদুল হক একই ইউনিয়নের চরনারান্দী গ্রামের মৃত আব্দুল হাই মাস্টারের ছেলে।

জানা যায়, মাহমুদুল হকের সাথে প্রায় ১৬ বছর আগে বকুল মিয়ার মেয়ে নাজমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুক হিসেবে মটোরসাইকেলের জন্য নাজমার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে তার স্বামী। এ সময় দেড় লক্ষাধিক টাকা দিয়ে একটি মটোরসাইকেল কিনে দেন শ্বশুর বকুল মিয়া। কিছুদিন পর আবারো ব্যবসার কথা বলে শ্বশুরের কাছে টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মাদক সেবন করে নাজমার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় মাহমুদুল। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় নাজমার বাবার বাড়িতে গিয়েও তাকে শারীরীক নির্যাতন করা হতো। এসব নিয়ে সামাজিকভাবে অনেক দেন দরবার হয়েছে। পরে মেয়ের সুখের চিন্তা করে দুইদফায় তাকে প্রায় পাঁচলাখ টাকা দেওয়া হয়। কয়েকদিন পর সে যৌতুকের জন্য আরো বেপোরোয়া হয়ে উঠে।

গত জানুয়ারি মাসে আরো পাঁচলাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রী নাজমাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মনোহরদী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতেই অবস্থান করে আসছে নাজমা। পরবর্তীতে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকী দিয়ে আসছে মাহমুদুল। 

এ ঘটনা শ্বশুর বকুল মিয়া মনোহরদী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এর জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে শ্বশুর বকুল মিয়াকে রাস্তায় পেয়ে শারীরীক নির্যাতন করা হয়। এ সময় বাধা দিতে এলে বকুলের চাচী আছিয়া (৫০) কে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে মাহমুদুল। ঐ রাতেই সে আবারো লোকজন নিয়ে বকুলের বাড়ির পশ্চিম পাশে দুই বিঘা জমির প্রায় তিনশ কলাগাছ এবং বাড়ি সংলগ্ন আরো বেশকিছু ফলদ গাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। এ ঘটনায় মনোহরদী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এ ঘটনায় বক্তব্য নেওয়ার জন্য মাহমুদুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আবুল কালাম বলেন, ঘটনা সম্পর্কে ক্ষতিগ্রস্ত বকুল মিয়া আমাকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য তাকে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।