ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ২০ একর জমির বোরো ধান নষ্ট
by বিপুল সরকার সানি, দিনাজপুরদিনাজপুরের বীরগঞ্জে ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসে প্রায় ২০ একর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, ভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট হয়েছে আম, লিচুসহ ভুট্টাক্ষেত। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ জন কৃষক স্বাক্ষরিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২১ মে বীরগঞ্জ উপজেলার ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের আদর্শগ্রাম এলাকায় মেসার্স মা ব্রিকস ইটভাটা কর্তৃপক্ষ উৎপাদন বন্ধ করে। এ সময় ভাটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়ে গ্রামের কয়েক কিলোমিটার এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যায়। কয়েকদিন পরই কৃষকেরা দেখতে পান তাদের বোরো ধানের গাছ ঝলসে গেছে এবং গাছে আসা ধানগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে।
বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে ইতোমধ্যে প্রায় ২০ একর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন কৃষকেরা। একইসঙ্গে আশপাশের আম ও লিচু ফলের গোড়া কালো বর্ণ ধারণ করে পড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষেতের ভুট্টাও।
সুজালপুরের আরিফবাজার গ্রামের আব্দুল কাদের জানান, আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই এসব ধান ঘরে উঠতো। কিন্তু ইটভাটার গ্যাসের কারণে এখন তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন।
একই এলাকার সফিকুল ইসলাম জানান, এভাবে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই ঋণ করে, আবার অনেকেই বর্গায় জমি নিয়ে চাষাবাদ করেছেন।
ইটভাটার মালিক আলহাজ সমশের আলী জানান, গত ৪০ বছরের অভিজ্ঞতায় এমন ঘটনা ঘটেনি। ভাটার ধোঁয়ার কারণে এই ক্ষতি হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না। বর্তমানে ভাটায় ইট উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনোরঞ্জন অধিকারী জানান, কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেত ও এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে, যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করা হবে।
বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন জানান, কৃষকদের দাখিল করা অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফসলের যা ক্ষতি হয়েছে, সেসবের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য বলা হয়েছে। কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য ক্ষতিপূরণের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজন হলে ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।