‘বিড়ি শ্রমিকদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচার হচ্ছে’
by বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্টজাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গবেষণায় বাংলাদেশে বিড়ি শ্রমিকের সংখ্যা ৪৬ হাজার, অথচ কারখানা মালিকদের দাবি এ সংখ্যা ২০ লাখ। এ কারণে বিড়ি শ্রমিকদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা। শুক্রবার (২৯ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মিথ্যাচারের দাবি করে প্রজ্ঞা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করতেই প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার আগে বিড়ি মালিক এবং কিছু সুবিধাভোগী বিড়ি শ্রমিক নেতা শ্রমিকদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচার করেন। তারা দাবি তোলেন বিড়ির কর বাড়ানো হলে দেশের বিড়ি কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ২০ থেকে ৩০ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। বিড়ি শ্রমিকদের সংখ্যা নিয়ে যে কাল্পনিক তথ্য বছরের পর বছর তারা দিয়ে থাকেন,তা মিথ্যা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘দ্য রেভিনিউ অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট আউটকাম অব বিড়ি ট্যাক্সেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা। এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিড়ি শিল্পে কর্মরত নিয়মিত-অনিয়মিত এবং চুক্তিভিক্তিক মিলিয়ে পূর্ণসময় কাজ করার সমতুল্য শ্রমিক সংখ্যা মাত্র ৪৬ হাজার ৯১৬ জন। বিড়ি শিল্পের কাজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং মজুরিও খুব কম। মাসে এদের গড় আয় মাত্র এক হাজার ৯৭২ টাকা। একজনের আয়ে সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের শিশু ও নারীসহ সবাইকে বিড়ি তৈরির ঝুঁকিপূর্ণ কাজে সম্পৃক্ত হতে হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বিড়ির কার্যকর মূল্য বৃদ্ধির জন্য সম্পূরক শুল্কের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করার সুপারিশ করা হয়। বিড়ির কর ও মূল্য কার্যকরভাবে বৃদ্ধি করা হলে বর্তমান এবং ভবিষ্যতে কয়েক লাখ বিড়ি ধূমপায়ীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। বিড়ি থেকে রাজস্ব আয় বেড়ে যাবে দ্বিগুণেরও বেশি।
এ খাত থেকে পাওয়া বাড়তি রাজস্ব দিয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হলে খুব সহজেই এই ঝুঁকিপূর্ণ এই পেশায় নিয়োজিত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পুনর্বাসন করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে বিড়ি শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যক্রম নিতে হবে। সরকারিভাবে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলে ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশ বিড়ি শ্রমিক এই ক্ষতিকর পেশা ছেড়ে দিতে চান বলে গবেষণায় বলা হয়।