৫৫ হাজার পরিবারে অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দিল ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

by

করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। বাংলাদেশে টানা সাধারণ ছুটিতে শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা এখন চরমে। বিশেষ করে রিকশাওয়ালা, হকার কিংবা সরকারের ট্রেড লাইসেন্স ও শ্রম আইনের অধীনে নেই এরকম অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের লাখ লাখ শ্রমজীবী এখন ভবিষ্যত নিয়ে অন্ধকারে। চাল ডাল তেলসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যাক্তি পর্যায়ে বিতরণ করা হলেও বেশিরভাগ দরিদ্র পরিবারে নগদ টাকার প্রয়োজন। ইতিমধ্যে সরকার থেকে ৫০ লাখ পরিবারের জন্য আড়াই হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রদান করা হলেও বেসরকারি কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নগদ টাকা দিতে খুব বেশি দেখা যায়নি।

তবে লকডাউনের কারণে কর্মহীন অসহায় দরিদ্র পরিবারের পাশে নগদ টাকা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ। প্রায় ১৯ হাজার দরিদ্র পরিবারকে নগদ ৫ হাজার টাকা করে প্রদান করেছে সংস্থাটি।

আজ শুক্রবার মিরপুরের দরদ্রি ২৪৩ পরিবারের মধ্যে নগদ ৫ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়। সংস্থাটির ন্যাশনাল ডিরেক্টর চন্দন জেড গমেজ ও রিজিওনাল ফিল্ড ডিরেক্টর মঞ্জু মারিয়া পালমা উপস্থিত থেকে রাজধানীর পল্লবীর মট্স কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে এসব অর্থ প্রদান করা হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উপকারভোগীদের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে এই অর্থ তুলে দেয়া হয়।

বিতরণ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন ভূইঁয়া, ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সাজ্জাদ হোসেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন মিরপুর আঞ্চলিক কর্মসূচীর ব্যবস্থাপক যোয়ান্না ডি’ রোজারিও প্রমুখ।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের ন্যাশনাল ডিরেক্টর চন্দন জেড গমেজ বলেন, সমগ্র দেশব্যাপী ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের এই কভিড-১৯ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও তাদের পরিবারের জন্যে ওয়ার্ল্ড ভিশন এর উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ সবসময়ই শিশু কল্যাণের জন্যে কাজ করে আসছে। দুর্যোগে শিশু ও তার পরিবারও যেন সুরক্ষিত ও নিরাপদ থাকে সে জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ কভার রেসপন্স প্রকল্পের আওতায় পুরো দেশে ৫৬ উপজেলায় আঞ্চলিক কর্মসূচির মাধ্যমে ১৮ হাজার ২৫৬ জন দরিদ্র পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আরো ৩৫ হাজার ২৯৫ জন পরিবারকে খাদ্য সামগ্রীসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করেছে।

মঞ্জু মারিয়া পালমা বলেন, করোনা দুর্যোগে মানুষের নগদ টাকার খুবই প্রয়োজন। দুর্গত মানুষের কষ্টের বিষয়টি চিন্তা করেই ওয়ার্ল্ড ভিশন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিগত সময় বিভিন্ন দুর্যোগে যেমনটি ছিলাম আমরা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে খুবই সচ্ছতার সঙ্গে যাচাই বাছাই করেই যারা প্রকৃত অর্থে পাওয়ার দাবি রাখে ওইসব পরিবারকে বাছাই করেই নগদ সহায়তা করছি আমরা।

স্থানীয় কাউন্সিলরসহ অন্যান্য অতিথিগণ ও দরিদ্র বস্তিবাসীদের জন্যে ওয়ার্ল্ড ভিশন এর এই উদ্যোগকে স্বাগত এবং ধন্যবাদ জানান। গুদারাঘাট বস্তি থেকে আসা লাবনী আক্তার (৩০) নগদ অর্থ সহায়তা পেয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করে বলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন এর টাকা আমার পরিবারের জন্য অনেক উপকার করবে। গত দুই মাস যাবৎ আমার কোনো উপার্জন নাই, ঘর ভাড়া দিতে পারিনা, বাচ্চাদের খাবার নাই। এই সাহায্য আমার জীবন ফিরিয়ে দিল।