অনুমতি নিয়েই জেট বিমানে দেশ ছাড়েন সিকদার গ্রুপের দুই ভাই

by
https://cdn.banglatribune.com/contents/cache/images/800x0x1/uploads/media/2020/05/29/0316403eb3ca9512396f5fb72f9db676-5ed121c9630d9.jpg
আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন লিমিটেডের এই জেট বিমানে ঢাকা ছেড়েছেন রন হক সিকদার এবং দিপু হক সিকদার

সিকদার গ্রুপের মালিক জয়নুল হক সিকদারের দুই ছেলে রন হক সিকদার এবং তার ভাই দিপু হক সিকদার ব্যক্তিগত জেট বিমানে ঢাকা ছেড়েছেন। অনুমতি নিয়েই সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন লিমিটেডের একটি জেট বিমানে তারা ঢাকা থেকে ব্যাংকক গেছেন। ২৫ মে সকাল ৯টা ১১ মিনিটে তাদের নিয়ে বিমানটি ঢাকা ছাড়ে। বিমানবন্দর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া শুরু করতে রাজি না হওয়ায় এক্সিম ব্যাংকের দুই পরিচালককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২৬ মে রাতে গুলশান থানায় সিকদার গ্রুপের দুই পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলার আসামিরা হলেন সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার এবং তার ভাই দিপু হক সিকদার। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সিকদার গ্রুপের একটি জেট বিমান সকালে বের হতে দেখেছি। সেটি আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসে। তবে কারা সেই বিমানে ছিলেন সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে রেগুলার ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। তবে সরকারের অনুমতি নিয়ে বিশেষ ফ্লাইট চলছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কেউ অনুমতি নিয়ে এলে সেই ফ্লাইটগুলো পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল-আহসান বলেন, ‘২৫ মে আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশনের একটি স্পেশাল ফ্লাইট ঢাকা থেকে ব্যাংককের উদ্দেশে যাত্রা করে। যথাযথ অনুমোদন নিয়েই ফ্লাইটটি পরিচালিত হয়েছে।’

জানা গেছে, আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশন লিমিটেডের বহরে হেলিকপ্টার ছাড়াও একটি Hawker 800A জেট বিমান রয়েছে, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর S2-AHS। মূলত দেশের বাইরে চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনা করতে এই জেট বিমানটি ব্যবহার করা হয়। আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশনের এই জেট বিমানটিতে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি রোগী পরিবহনের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সরঞ্জাম রয়েছে।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, সরকার, দুদক, আদালত কোনও ব্যক্তিকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিলে তাদের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদারের ক্ষেত্রে দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা ছিল না। বরং, তারা যথাযথ অনুমতি নিয়েই এসেছেন। ফলে বিমানবন্দরে তাদের আটকে দেওয়ার সুযোগ নেই।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হেলিকপ্টার ও ছোট উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিটি ফ্লাইটের আগে গন্তব্য স্থান, যাত্রীর তালিকাসহ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ আবেদন করে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুমতি দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আবেদনে যাত্রীদের তথ্য ও গন্তব্য তথ্য যা দেওয়া হয় কিংবা ফ্লাইটের সময়ে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কিনা, তা নজরদারি হয় না। এমনকি নির্ধারিত গন্তব্যের বাইরে অন্য কোথাও উড়োজাহাজ অবতরণ করছে কিনা, তাও রয়েছে নজরদারির বাইরে। নজরদারি না থাকার বিষয়ে ২০১৯ সালের মে মাসে উদ্বেগ প্রকাশ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী