হঠাৎ করে...
by সেলিনা আক্তারআমি আর জ্যাক লেক্সিংটনে এসে তৃতীয়বারের মতো দেখা করলাম। যদিও আজ দেখা হওয়ার কথা ছিল না। আমাদের ডেটিংয়ের সময় অনেক আগেই নির্ধারণ করা আছে। আগামী রোববার। জ্যাক হঠাৎ করেই ফোন করে জানতে চাইল—
-হানি তুমি কোথায়?
-আমি ফিফথ অ্যাভিনিউতে।
-ফ্রি আছ? এখানে কী করছ?
-হ্যাঁ ফ্রি। কাজ ছিল। তাই এদিকে এসেছিলাম। তবে শেষ।
-আমি আসছি; অপেক্ষা কর ওখানে।
জ্যাক বেশি সময় নেয়নি। এসে জড়িয়ে ধরে আমার কপালে আস্তে করে একটা চুমু দিল। তারপর একটা প্যাকেট হাতে ধরিয়ে দিল।
-এটা তোমার জন্য হানি।
-কেন?
-তোমার পছন্দ না হলে দিয়ে দাও।
-না, না, হয়েছে। হেসে আমি ধন্যবাদ দিলাম। সেও হাসল।
গিফট ব্যাগের ভেতরে ড্রেসের বক্স। ওপরে ছবি। গতকাল ফ্লাইট নিয়ে জ্যাকের প্যারিস যাওয়ার কথা ছিল এবং গিয়েছেও। সেখান থেকেই কালো পার্টি গাউন নিয়ে এসেছে। যদিও আমি এ রকম কিছু কখনো আশা করিনি। ইনফ্যাক্ট জ্যাকের সঙ্গে আমার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। যা কিছু আছে, তাও নিতান্ত কাজের খাতিরে। তবে গত সপ্তাহ থেকে কীভাবে এত কাছে চলে এসেছি, আমি নিজেও জানি না।
আমরা এখান থেকে হলুদ ট্যাক্সি ক্যাবে করে আপটাউনের দিকে রওনা দিলাম। মেডিসন অ্যাভিনিউয়ের ই-৫৯ স্ট্রিট। একটা অ্যাপার্টমেন্টের সামনে নামলাম আমরা। দুতলায় উঠে এলাম। অনেকটা হোটেলমতো অ্যাপার্টমেন্টের দরজায় কলিং বেল টিকতেই এক ভদ্রলোক দরজা খুলে দিলেন। জ্যাক হ্যালো বলে পরিচয় করিয়ে দিল।
-আমার বন্ধু নিকোলাস আর ও জেনি। সেও আমার লিটল ফ্রেন্ড। আসলে জ্যাক আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড় তাই সে আমাকে লিটল ফ্রেন্ড বলে।
নিকোলাস আর আমি হ্যান্ডশেক করলাম।
ড্রয়িং রুমে আমাকে বসিয়ে ওরা দুজন চলে গেল বেডরুমে। আমি সাধারণত কারও ওপর ভরসা করতে পারি না। কিন্তু জ্যাককে করা যায়। ওকে আমি চিনি প্রায় ১০ বছর হয়। সে শুধু বলেছে, তার এক বন্ধুর বাসায় যাবে; কাজ আছে। আমিও বলেছি, ঠিক আছে। কেন, কী উদ্দেশ্য, কিছুই জিজ্ঞেস করিনি।
আমি শরীর থেকে ওভার কোটটা খুলে সোফায় রাখলাম। সোফাটা সিঙ্গেল। বসে অনুধাবন করার চেষ্টা করলাম যে, এ লোকের পেশা কী? রুচি কী? কারণ লিভিং রুমটা আসলে অতি সাধারণ বাড়ির মতো নয়। খুব শৈল্পিক। দেখলে একটা শুটিংয়ের রুম মনে হবে। একপাশে কিচেন, একপাশে লিভিং রুম। সরঞ্জাম যা দেখা যাচ্ছে, তার বেশির ভাগই ওয়াইন, ভদকা, হুইস্কির বোতল। সঙ্গে গোল ট্রেতে সাজানো ওয়াইন গ্লাসগুলো। সামনের পুরো দেয়ালে একটা আয়না। তার সঙ্গে লাগানো ডেস্কে রাখা বিভিন্ন ছড়ানো ছিটানো কাগজের শিট। সব অফসেট পেপার। ডেস্কের সঙ্গে বিশাল মনিটরের টিভি স্ক্রিন। এক পাশে কম্পিউটার। পেছনে একটা স্ট্যান্ডে ক্যামেরা সেট-আপ করা। একটা স্ট্যান্ডে বড় ল্যান্ডস্কেপে অসমাপ্ত ছবি। রুমের একপাশে অনেকগুলো ছবি রাখা। সবই খুব অগোছালো; কিন্তু শিল্পের ছোঁয়া রুমজুড়ে। কিছু টবে পাতা, ফুলও রয়েছে। এগুলো প্লাস্টিক, না আসল বোঝার উপায় নেই। এ লোক লাইভ কোনো প্রোগ্রাম করে নিশ্চয়। ক্যাপ্টেন জ্যাককে জিজ্ঞেস করলে জানা যায়। কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা জ্যাক কখনো বলে না। তাই আমিও চুপ থাকি। যদিও কখনো কখনো ফুলস্টপ দিতে ভুল হয়ে যায়।
দশ বছরে কখনো যা হয়নি, তা হয়ে গেছে দু সপ্তাহ আগে। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে নিউইয়র্কে আসব আমরা। আমেরিকান এয়ারলাইনসের লাউঞ্জে ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করছি। ফ্লাইট আসতে দেরি হচ্ছিল। আমরা সব কেবিন ক্রু একসঙ্গেই বসে আছি। আমি আর ক্যাপ্টেন জ্যাক পাশাপাশি বসা। জ্যাক ফিরিঙ্গি আমেরিকান। ফরসা সুন্দর। প্রায় ছয় ফুটের মতো লম্বা। সাদা শার্টে ক্যাপ্টেনকে যেন আরও সাদা লাগে। আমি ফ্লাইট অ্যাটেন্ড্যান্ট হিসেবে কাজ করছি অনেক দিন। এ দেশে এসেছিলাম স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে। ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করে একটা কিছু হব। কিন্তু আমার খরচ বহন করার মতো অবস্থা নেই। পার্টটাইম হিসেবে ডেলটা এয়ার লাইনসে চাকরি শুরু করি। তারপর অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। তবে বেশির ভাগই আমার স্ট্যাটাসের জন্য। সাধারণত সবার ক্ষেত্রে যা হয়। ছাত্র ভিসায় বেশি কাজ করার অনুমতি মিলত না। এক সময় পড়া শেষ হলো। ব্যাচেলর ডিগ্রিটা নিলেও চাকরি আর বদল করিনি। গ্রিনকার্ড পাওয়ার পর থেকে আমেরিকানে ফুলটাইম চাকরি করছি। উড়তে আমার ভালোই লাগে।
প্রথম প্রথম ভয় লাগত প্লেন টেক অফ করার পর। এখন নিজেকে বিহঙ্গ মনে হয়।
সে দিন অনেক খুশি হয়ে ক্যাপটেন জ্যাককে জানালাম—
–জ্যাক আমার সিটিজেনশিপ পেয়েছি
–খুবই চমৎকার। তাহলে তো সেলিব্রেট করতে হয়।
–অবশ্যই!
–ঠিক আছে আমি করব। সন্ধ্যায় কী তোমার ফ্লাইট আছে?
–না, নেই। এটাই শেষ আমি নিউইয়র্কই প্যাক করব।
–আপাতত আমারও তাই। তবে শেষ ফ্লাইট নিয়ে রাত ১১টায় মায়ামি যেতে হবে। রাতে আমার সঙ্গে ডিনার কর। আমি বাসায় যাব না। লা গার্ডিয়ার স্লিপিং রুমে রেস্ট নেব।
-আচ্ছা।
সেদিন আমি বাসায় আমার ব্যাগেজ সব রেখে, ফ্রেশ হয়ে একটু বিশ্রাম নিই। তারপর রেডি হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল সাবওয়ে মার্কেটে একটা ওয়াইন শপে ক্যাপ্টেন জ্যাকের জন্য অপেক্ষা করি। আমি একটা সাদা শার্ট ওপরে লাল জ্যাকেট পরি। জানুয়ারি মাস খুব ঠান্ডা। তবু মনের মধ্যে অন্য রকম উত্তেজনা। মনে হচ্ছে আমি ঘামছি। ক্যাপটেন জ্যাকের অফার আমার জন্য অনেক বড় বিষয়। সবচেয়ে বড় জিনিস, তিনি নারী ঘেঁষা ধরনের মানুষ নন। ব্যক্তিত্বে অটল, স্বল্পভাষী মানুষ। উনি অনুমতি দিলে সবাইকে চিৎকার করে বলে দিতাম। চিৎকার তো লাগে না একটা সেলফি তুলে ফেসবুকে দিলেই হতো। কিন্তু এটা মনে হয় না, তিনি অ্যালাও করবেন।
আমি কোনো হার্ড ড্রিংক করি না। কিন্তু জ্যাক আমার জন্য রেড ওয়াইন, আর নিজের জন্য ভদকা অর্ডার করলেন। এপিটাইজারের জন্য জিজ্ঞেস করলেও আমি কিছু বলিনি। তিনি অনিয়ন রিং অ্যাড করলেন। সুন্দর মতো একটা মেয়ে সব দিয়ে গেল। রিংটা আমার অসম্ভব টেস্টি মনে হলো। কিন্তু ওয়াইন তো মনে হলো বিষের মতো। চেষ্টা করে মুখ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি বোধ করি বুঝতে পেরেছেন। আমার গ্লাসটা নিয়ে আমাকে ওনারটা টেস্ট করতে বললেন। বরফ দেওয়া এ কারণে বোধ করি আমার কাছে অন্য রকম লাগল। আমি সেটায় দু-এক চুমুক দিলাম।
এর মধ্যে জ্যাকের ছেলে ব্রায়ান ফোন করল। কথায় কথায় জানলাম, জ্যাকের মা অনেক দিন ধরেই চীনে আছেন। জ্যাকের মা-বাবা আর ছেলে ব্রায়ানই বাড়িতে থাকে। তাঁর স্ত্রী লারা চীনের সাংহাইয়ের মেয়ে। লারার সঙ্গে তাঁকে অবশ্য একটা পার্টিতে দেখেছি আমি। আমার ধারণা ছিল চীনের সব মানুষ খাটো হয়। কিন্তু পরে জানলাম সাংহাইয়ের মানুষ যথেষ্ট লম্বা হয়। সেটা আমাদের সহকর্মী সাবরিনা বলেছে। জ্যাক বললেন, তাঁর মা-বাবা অনেক বয়স্ক এবং অসুস্থ। তাই তাঁরা সেখানে আছেন দীর্ঘ দিন।
ব্রায়ানের বয়স আঠারো হবে এ বছর। সে এখন নিজেই অনেক কিছু করতে পারেন। এ জন্য সে গিয়েছে। এর মধ্যে জ্যাকের বোনের ছেলের প্রসঙ্গ এল, যাঁর পায়ে এক অজানা রোগ বাসা বেঁধেছে। বলতে বলতে তিনি টিস্যু দিয়ে চোখ মুছলেন। আমি বুঝতে পারছিলাম না । তিনি কী ড্রিংক বেশি করে ফেলেছেন? নাকি কোনো কারণে দুঃখী। আমি তবু জিজ্ঞেস করলাম, ‘ক্যাপটেন তুমি ঠিক আছ?’ হাসিমুখে বললেন, ‘ঠিক আছি।’ কষ্টটা কোথায়? তাঁর কী স্ত্রীর সঙ্গে কিছু হয়েছে? শুধু মাত্র ভাগনের অক্ষমতায়, অসুস্থতার জন্য কেউ কাঁদে। চোখ মুছলেও জ্যাকের চোখ ভরে উঠছে পানিতে। আমি অনেকক্ষণ জ্যাকের হাত ধরে বসেছিলাম। তারপর আমরা ডিনার সেরে উঠলাম। এটা ছিল একটা হঠাৎ সেলিব্রেশন। কোনো পূর্ব পরিকল্পিত কিছু না। আমি জ্যাককে সমীহ করে কথা বলি সব সময়ই।
কোনো ভণিতা ছাড়াই ক্যাপ্টেন আমার ঠোঁটে আলতো করে চুমু খেলেন। আমি যেন জানতাম এমন কিছু হওয়ার কথা ছিল। মনে পড়ল জ্যাকের সঙ্গে যেদিন প্রথম ডিউটি পড়েছিল, আমি মনে মনে বলেছিলাম, সে অনেক হ্যান্ডসাম। তখন জ্যাক আরেকটু ইয়াং ছিলেন। পার্টিতে লারাকে দেখে মনে মনে বলেছি, এ চাইনিজ লেডি তো অনেক ভাগ্যবান। জ্যাকের মতো স্বামী পেয়েছে। তবে কী জ্যাকের প্রতি আমার কোনো লোভ ছিল?
পায়ের শব্দে আমার ধ্যান ভাঙল। তাঁরা দুজন নেমে এলেন। নিকোলাস ক্ষমা চাইলেন। আমাকে আতিথেয়তা করতে পারেননি বলে। জানালেন, তাঁর একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে। আমরা হাসি মুখে বিদায় নিলাম। মিডটাউনের পথে হাঁটতে হাঁটতে জ্যাক বলল, ‘লাঞ্চ করবে?’
এ কয়েক’দিন ফোনে অনেক বার্তা পাঠিয়েছি দুজন। বিগত দশ বছরে যা জানতাম না, জানা হলো। শুক্র-শনি দু দিন জ্যাক তাঁর মা-বাবা আর ছেলেকে দেবে। রোববারটা আমরা একসঙ্গে কাটাব।
-আমি ক্ষুধার্ত।
-আমিও।
জ্যাক কী বুঝল! হাসি দিয়ে খোলা রাস্তায় সবার সামনে একটা চুমু দিল। আমরা একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। খাবার খেতে খেতে কথা বলছি। এক সময় ক্যাপ্টেন একটা সাদা স্টিলের পাইপ এগিয়ে দিল। ভেতরে সাদা পানি। আমি ভাবলাম কলম।
- টান দাও। (প্রথমে না করলেও দিলাম)
-কী? ই-সিগারেট?
-হ্যাঁ, সঙ্গে মারিজুয়ানা।
-কেন নাও? সব সময় নাও? (বিমানে নিষিদ্ধ)
-খুব রেয়ার না। শুধু অফ ডেতে কখনো। (আমরা সবাই-ই টানা ডিউটি করে পরে দু সপ্তাহ একসঙ্গে ছুটি কাটাই।)
-ব্রায়ান সম্ভবত নিয়েছে। আমি ওর বিছানার নিচে পেয়েছি।
-কী? তুমি কিছু বলনি? (আমি আকাশ থেকে পড়লাম)
-কিছু হবে না । বললে আমার প্রতি শ্রদ্ধা কমে যাবে। ওর বেডের নিচে কনডমও পেয়েছি। ওর গার্লফ্রেন্ড এলিজাবেথ মনে হয় আসে। ওর বয়সে আমিও নিয়েছি। এত চিন্তা করো না।
আমার মুখ দেখেই বললেন বোধ করি। কী নির্বিকার একজন পিতা। আমি আশ্চর্য না হয়ে পারি না।
-তুমি কষ্ট পাওনি?
-না। এটা তার জীবন। তবে সে কোনো ব্যাপারে সীমা পার করে না। মা-বাবা কাছে নেই , তাই একটু সুযোগ নিচ্ছে। এ বয়সে এটা হয়। সে স্টাইভ্যান্টশনের সেরা ছাত্র। সব টপ ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে। তবে একটু সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। তার মাকে প্রয়োজন। ওর মা আমার ওপর রেগে আছে।
-কেন?
-তোমার মনে আছে দু বছর আগে স্যান্ডি ঝড়ের কথা?
-হ্যাঁ আছে।
-ঝড় শুরুর আগে আগে আমার ফ্লাইট ছিল। মায়ামি থেকে নিউইয়র্ক আসছি। আমার সঙ্গে কো-ক্যাপ্টেন লুসিফার ছিল। ক্রাফট বারবার বাম্পিং করছে। কোনোভাবে বোধ করি তাঁর লিপস্টিক আমার সাদা শার্টে লেগেছে। সেটা নিয়ে ঝগড়া করে। কিন্তু আমি অনেস্টলি বলছি ওরকম কিছু না। আমি বেঁচে এসেছি সেটা না দেখে সে শুরু করল ফাইট। আমিও বলেছি, চলে যেতে। আই ডোন্ট কেয়ার।
-আমি খুব দুঃখিত জ্যাক। (আমি বুঝতে পারলাম ক্যাপ্টেনের ভেতরের কষ্টটা। কেউই চায় না তার সংসার নষ্ট করতে।)
-আমার অনুরোধ জেনি, তুমি ভুল বুঝো না। তোমার সঙ্গে কেন, কারও সঙ্গেই মেশার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। হঠাৎ করে কী থেকে কী হয়ে গেল!
-আমি জানি। আমি তোমাকে অনেক শ্রদ্ধা করি ক্যাপ্টেন। তুমিও আমাকে কখনো ছোট ভেবো না।
জ্যাক আমার ঠোঁটে মুখ রেখে আর কোনো কথা বলতেই দিল না। আমরা উঠলাম এবং জ্যাক মনে করিয়ে দিল রোববারে সে আমাকে সকালে পিক-আপ করতে আসবে। আসতে আসতে ভাবছিলাম কেন মানুষ এত ভুল বোঝে? আমার বয়ফ্রেন্ড আমাকে বিশ্বাসই করতে পারত না। আমি কাজের জন্য অন্য স্ট্যাটাসে থাকলে সে সন্দেহ করত। ফোনের রিং টোন অফ করে ঘুমালে শুধু ভুল বুঝত। ঘুম না হলে আমার কাজ করা দায় হয়ে পড়ত। দীর্ঘ আকাশভ্রমণে মাথা এমনিতেই ঘুরত। রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়ছিলাম। তবে এ ব্রেক-আপটা আমাকে কষ্ট দিলেও নতুন জীবন দিয়েছে। আমি বেঁচে গেছি। আর ক্যাপ্টেন নতুন মাত্রা দিয়েছে। অনেক ভরসা করার মতো একজন মানুষ । আমার থেকে দশ-পনেরো বছর বড় একজন মানুষের সঙ্গে আমি কখনো স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারব ভাবিনি। কী লাভিং, কী কেয়ারিং! যখন নিজের কাজ থাকে না, নিজে এসে পিক-আপ করে। তবে এখনো কিছু জানি না ভবিষ্যতে কী হবে? আশার কথা হলো তাঁদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করে হয়েছে, চার্চে না। চার্চে হলে এঁরা কখনো বিবাহ বিচ্ছেদ নিতে পারে না।