বানারীপাড়ায় দম্পতির সফল ছাদকৃষি

by

শুধু ইট কাঠের নাগরিক সভ্যতার শহরগুলো নয় গ্রামাঞ্চল থেকেও দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ প্রকৃতি। কিন্তু মানুষ তার শিকড়কে সহজে ভুলতে পারে না। সবুজে ভরা গ্রাম বাংলায় বেড়ে ওঠা নাগরিক সমাজের একটা অংশ সবুজকে ধরে রাখতে চায় আবাসস্থলে। সৌখিন মানুষরা তাদের ঘরবাড়িতে সবুজ প্রকৃতিকে ধরে রাখার জন্য একান্ত নিজস্ব ভাবনা আর প্রচেষ্টায় নিজ বাড়ির ছাদে তৈরি করছে ছাদ বাগান। সময়ের সাথে এ বাগান এখন আর সৌখিনতায় আটকে নেই। নিরাপদ সবজি দিয়ে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদাপূরণ, পারিবারিক বিনোদন এবং অবসর কাটানোর এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে এ ছাদ বাগানগুলো।

এমনই এক নয়নাভিরাম ছাদ বাগান গড়ে তুলেছেন বরিশালের বানারীপাড়ার শেরে বাংলার স্মৃতিধন্য ভূমি চাখারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকু ও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাদিয়া শারমিন সুমি দম্পতি। 

এ দম্পতি তাদের বসত বিল্ডিংয়ের ছাদে ফুল-ফসলের এ আকর্ষনীয় বাগান গড়ে তুলে নিজেদের পারিবারিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝেও বিষমুক্ত সতেজ ফলমূল-শাক-সবজি বিতরণ করে থাকেন। তারা শুধু ছাদ কৃষিই নয় নিজ বাড়ির আঙ্গিণায়ও ফুল-ফল ও সবজির বাগান গড়ে তুলেছেন। এছাড়া মাছের ঘেরে নানা জাতের মাছ চাষ ও ঘেরের চারপাশে সবজি ও ফলের বাগান তৈরী করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। অনেকেই তাদের এ বাগানের সৌন্দর্য অবগাহন করতে যান। 

ছাদ বাগানে রয়েছে আঙ্গুর,চাইনিজ কমলা,মাল্টা,জাম্বুরা,আখ,থাই পেয়ারা,কলা,লাল কচু,পুদিনা পাতা,সৌদি খেজুর,রজনীগন্ধা গোলাপ, ডালিম, আনারাস, বিভিন্ন জাতের আম,ড্রাগন ফল,এলোভেরা, পেয়ারা, লকট, পেপে, পুঁই শাক,লাউ, কুমড়া,ঢেঁরশ,মরিচ,চিচিঙ্গা সহ নানা ধরণের ফুল, ফল ও সবজি গাছ। 

এছাড়া ছাদের এক পাশে তারা নানা জাতের কবুতরের খামার গড়ে তুলেছেন। বাড়ির আঙ্গিনায় রয়েছে সৌদি খেজুর,রাজশাহীর লিচু,নানা জাতের আম,কাঠাল প্রভৃতি ফলের গাছ। বাড়ির পিছনে গড়ে তুলেছেন দেশী মুরগির খামার। সব মিলিয়ে বাড়িটি যেন মাছ-মুরগি, ফুল-ফল ও ফসলে ঘেরা পরিপূর্ণ এক কৃষক দম্পতির বাড়ি। যদিও তারা রাজনৈতিক সচেতন সুশিক্ষিত এক আধুনিক দম্পতি তদুপরি কৃষি ও সবুজ প্রকৃতি প্রেম তাদের সেই পরিচিতি ভিন্ন রূপ করে দিয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক-জননী সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকু ও নাদিয়া শারমিন সুমি দম্পতি জানান শৈশবকাল থেকেই তারা কৃষি ও সবুজ প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রতি অনুরক্ত। আর সেই প্রকৃতি প্রেমই তাদেরকে এ ছাদ ও বাড়ির আঙ্গিনায় ফুল-ফল ও ফসলের বাগান এবং মাছ-মুরগি ও কবুতরের খামার গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করেছে।