করোনা জয়ী কুস্তিগীর রাসেল ভূইয়া এবার প্লাজমাদাতা
by নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লাকরোনাকে পরাস্ত করে কুমিল্লার তিতাসের মৌটুপির কুস্তিগীর রাসেল ভূইয়া এবার মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে থাকা ঢাকার বিশিষ্ট গামের্ন্ট ব্যবসায়ীকে বাঁচাতে রক্তের প্লাজমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার গৌরীপুর থেকে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে এই প্লাজমা প্রদান করেন। অসীম সাহসী ও মানবিক মানুষ কুস্তিগীর রাসেলের এই মহানুভবতা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লার হোমনার সংসদ সদস্য সেলিমা আহমেদ মেরী। তিনি জানান, আমরা যদি রাসেলের মতো আদর্শ নিয়ে চলতে পারি, একে অপরের জীবনে সহায়তা করতে পারি তাহলে তা হবে গর্বের বিষয়।
জানা গেছে, কুমিল্লার তিতাসের মৌটুপি গ্রামের রাসেলের পুরো নাম মো. রাসেল ভূইয়া। কুস্তিগীর রাসেল নামেই সবাই তাঁকে চিনেন। ত্রিশ বছরের রাসেল করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর নিজ উদ্যোগে কুমিল্লার তিতাসের মৌটুপী গ্রামে নিজের বাড়ির আশেপাশের মানুষদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করেন। সে সময় এলাকায় বাইরে থেকে কে কে এলো তাও তদারকি করেন তিনি। তাঁদের ভূইয়া বাড়িতেই তাঁর চাচাতো ভাই খোকন ভূইয়া ঢাকা থেকে সাইকেলে করে এসেছে এ খবর পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন সে বাড়িতে হাজির হন। খোকন ভূইয়ার তথ্য নেওয়ার সময় কুস্তিগীর রাসেল ভূইয়া একটি কাশি দেন। এতে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকদের সন্দেহ হয়। তারপর দিনই ৭ এপ্রিল তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১১ এপ্রিল জানা গেলো কুস্তিগীর রাসেল করোনা পজেটিভ।
পজেটিভ রিপোর্ট আসার পর শুরু হয় তার আরেক লড়াই। করোনা বিরুদ্ধে লড়াই। ১৫ এপ্রিল তাঁর দ্বিতীয় দফা নমুনা নেওয়া হয়। সে পরীক্ষায় তার নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। ২৪ এপ্রিল রবিবার তৃতীয় দফা তার নমুনা নেওয়া হয়। সে নমুনা পরীক্ষার ফলও নেগেটিভ আসে। তিনি করোনা মুক্ত হন। করোনার বিরুদ্ধে সাহসের সাথে লড়েছেন রাসেল। তার বাবা ও স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
বুধবার রাতে স্থানীয় দৈনিক কুমিল্লার কাগজের সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয়ের অনুরোধে গ্রীনলাইফ হাসপাতালের আইসিআইতে মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা ঢাকার বিশিষ্ট গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী খসরুল আলম খান রিপনকে বাঁচাতে বৃহস্পতিবার সকালেই ঢাকায় যান। ঢাকার বসুন্ধরায় অ্যাপোলো হাসপাতালে কুস্তিগীর রাসেল প্রদান করেন রক্তের প্লাজমা। বিকালে প্লাজমা থেরাপী ঐ ব্যবসায়ীকে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ঐ ব্যবসায়ীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বারের ভিরাল্লা গ্রামে।