চীনের নিন্দায় সরব যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া
by বিদেশ ডেস্কহংকং-এর ওপর নতুন নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দেওয়ার ঘটনায় চীনের নিন্দায় সরব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো। আইনটি পাসের পর বৃহস্পতিবার চার দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে এর কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, করোনা মহামারির মধ্যেই এমন পদক্ষেপ নিয়ে বেইজিং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ক্ষুন্ন করছে। একইসঙ্গে তারা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ব্যাহত করার ঝুঁকি নিচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হংকং-এর ওপর নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দেওয়ার চীনের সিদ্ধান্ত তার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জাতিসংঘ নিবন্ধিত চীন-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণা অনুযায়ী, এটি অবৈধ। এ আইন চাপিয়ে দেওয়া হলে হংকং-এর স্বায়ত্তশাসন আর অবশিষ্ট থাকবে না। এতে করে মানুষের স্বাধীনতা সীমিত হয়ে পড়বে। ‘এক দেশ, দুই নীতি’ও আর কার্যকর থাকবে না।
চার দেশ বলছে, হংকংয়ের বিক্ষোভ-উত্তেজনা প্রশমনের একমাত্র উপায় হচ্ছে, সেখানকার বাসিন্দাদের নিজ নিজ অধিকার ও স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সরকার ও জনগণের মধ্যে ‘পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য’ একটি পথ খুঁজে বের করতে হবে।
পশ্চিমা দেশগুলোর নিন্দা অবশ্য প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। এ সমালোচনাকে নির্লজ্জ হিসেবে আখ্যায়িত করে দেশটির দাবি, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ আন্দোলন, ‘সন্ত্রাসবাদ’ ও বিদেশি হস্তক্ষেপ মোকাবিলায় আইনটি পাস করা জরুরি হয়ে পড়েছিল।
বৃহস্পতিবার ২৮৭৮-১ ভোটে বিতর্কিত এই বিলটির অনুমোদন দেয় চীনের ন্যাশনাল পিউপিল কংগ্রেস। আল জাজিরা জানিয়েছে, ভোটাভুটির ফল বড় পর্দায় ভেসে ওঠার পর গ্রেট হল অব দ্য পিউপিলে সমবেত আইনপ্রণেতারা উল্লাসে ফেটে পড়ে।
চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি প্রণীত এই আইনে ‘দেশদ্রোহিতা, বিচ্ছিন্নতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর অধীনে হংকংয়ের আইনপ্রণেতাদের বাদ দিয়েই এসব অপরাধে অভিযুক্তদের সাজা দেওয়ার সুযোগ পাবে চীনা কর্তৃপক্ষ।
হংকং-এর চীন কর্তৃক মনোনীত কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অঞ্চলটির প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম-এর দাবি, এই আইনে স্বায়ত্তশাসন খর্ব হওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। ফলে এটি নিয়ে অন্য কোনও দেশেরও হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
এদিকে বিলটির বিরুদ্ধে হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বুধবার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে। তাদের ওপর রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে তিন শতাধিক মানুষকে। বিক্ষোভের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার পথেও অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।