https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/05/29/f3f614796f43175b1b6e35a180c33ff0-5ed08f71d8157.jpg?jadewits_media_id=1535783

দুই মাস পর সবজি রপ্তানি শুরু

by

প্রবাসীদের নিয়ে আসা বিশেষ যাত্রাবাহী বা চার্টার্ড উড়োজাহাজের ফিরতি ফ্লাইটের মাধ্যমে কুয়েতে সবজি রপ্তানি শুরু হয়েছে। তাতে দুই মাস পর বিশ্বের কোনো দেশে বাংলাদেশি সবজি রপ্তানি হলো। তবে যাত্রাবাহী বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ৪০টির বেশি দেশে এখনো সবজি রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

কয়েকজন রপ্তানিকারক জানান, কুয়েত এয়ারওয়েজের দুইটি ভাড়া করা (চার্টার্ড) উড়োজাহাজ ঢাকা থেকে ফিরে যাওয়ার সময় ওই উড়োজাহাজে করে গত মঙ্গল ও বুধবার ৫১ টন মরিচ, কাকরোল, করলা, পটল ইত্যাদি সবজি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে রপ্তানি করা হয়েছে। তবে চাহিদা থাকার পরও অন্যান্য দেশে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিশেষ উড়োজাহাজে করে পণ্য পরিবহনের সুবিধা কাজে লাগাতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন রপ্তানিকারকেরা।

করোনার কারণে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আকাশপথের যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সবজি রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। রপ্তানিকারকেরা চেষ্টা তদবির করায় গত ১৮ মে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় চার্টার্ড বিমানে খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কার্গো হিসেবে পরিবহনের অনুমতি দেয়।

রপ্তানিকারকেরা জানান, বাংলাদেশের সবজির বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্যের কাতার, সৌদিআরব, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইউরোপের যুক্তরাজ্য, ইতালি ও ফ্রান্স। এ ছাড়া বাহারাইন, ওমান, মালয়েশিয়া, সুইডেন, কানাডা, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশেও কিছু সবজি রপ্তানি হয়। সবজির পাশাপাশি আম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূলও রপ্তানি হয়ে থাকে। মে থেকে আগস্ট এ সময়ে রপ্তানি সবচেয়ে বেশি হয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলারের সবজি রপ্তানি হয়েছে। চলতি ২০১৯–২০ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) রপ্তানি হয়েছে ১৪ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের সবজি, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮০ শতাংশ বেশি। মার্চ পর্যন্ত সৌদি আরবে ৫ কোটি ৮৯ লাখ, যুক্তরাজ্যে ৩ কোটি ১৫ লাখ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১ কোটি ১৭ লাখ, কুয়েতে ৬৩ লাখ, কাতারে ৬২ লাখ ডলারের সবজি রপ্তানি হয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, লকডাউন চললেও নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির চাহিদা খুব একটা কমেনি। যেমন, কাতারে প্রতিদিন ৩০ টন সবজি পাঠানোর মতো ক্রয়াদেশ পাওয়া যাবে। আমরা পাঠাতে পারছি না। তাই বিদেশি ক্রেতারা বিকল্প উৎস থেকে পণ্য নিচ্ছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিমান সংস্থার পণ্যবোঝাই বা কার্গো উড়োজাহাজ আসা-যাওয়া করছে। তবে সেসবের ভাড়া যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের চেয়ে তিনগুণ বেশি। তাই সবজি রপ্তানিকারকেরা পণ্য পাঠাতে পারছেন না। প্রথম থেকেই চার্টার্ড বিমানে পণ্য পরিবহনের অনুমতি দিলে কিছু সবজি রপ্তানি করা সম্ভব হতো।

ভারত সবজির বাজার দখল করছে বলে দাবি করেন সমিতির সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, যাত্রীবাহী আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকলেও ভারত কার্গো উড়োজাহাজ চালাচ্ছে। সে কারণে দেশটির রপ্তানিকারকেরা কম খরচে সবজি রপ্তানি করতে পারছে। অন্যদিকে আমাদের দেশে সে রকম কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। ফলে আমরা ক্রেতা হারাচ্ছি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মফিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভাড়া করা উড়োজাহাজ বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে। ভবিষ্যতেও আসবে। তবে সেসব উড়োজাহাজে করে শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্যেই সবজি রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।