মর্মান্তিক! ফাঁকা স্টেশনে মৃত মাকে জাগানোর আপ্রাণ চেষ্টা শিশুর
by কালের কণ্ঠ অনলাইনপৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন মা। কিন্তু অবোঝ শিশু তা বোঝেনি। সে ভেবেছিল পথের ক্লান্তি মেটাতে মা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাই তো মায়ের গায়ে থাকা কাপড় ধরে টেনেই চলেছে খুদে। এমনই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী ভারতের বিহারের মুজফ্ফরপুর স্টেশন।
দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ভারতের বিহারে মুজফ্ফরপুরে বাড়ি মৃত ওই নারীর। সন্তানকে নিয়ে সাজানো সংসার। কিন্তু সন্তানের মুখে অন্ন জোগানোর ক্ষমতা না থাকলে কি আর মা শান্তি পান? তাই পেটের দায়ে ছুটে গিয়েছিলেন গুজরাট। প্রথম কয়েকমাস আয় যে হয়নি তা নয়। দিব্যি কোলের সন্তানকে নিয়ে খেয়ে পরে কাটছিল দিন। কিন্তু লকডাউন যে সব বদলে দেবে তা শুরুতেই আঁচ করেছিলেন ওই নারী। কাজ বন্ধ। যার ফলে আয় হচ্ছিল না কিছুই। হাতে যা ছিল তা দিয়ে প্রথম কয়েকদিন খাবার জুটেছিল।
কিন্তু কতদিনই বা সঞ্চিত টাকায় সন্তানকে খাওয়াতে পারেন ভিনরাজ্যে কাজ করা শ্রমিক মা। তাই নিজে তো দূর, সন্তানকে খাওয়াতে পারেননি তিনি। না খেয়েই কেটেছে দিনের পর দিন, রাতের পর রাত। সন্তানের মুখ চেয়ে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন বাড়ি ফিরতে পারলে কিছু না কিছু ব্যবস্থা হবেই। তাই গুজরাট থেকে বিহারে ফেরা শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে ছেলেকে নিয়ে চড়ে বসেন। সেখানেও মেলেনি খাবার, পানি। আবার তার ওপর তীব্র গরম। সব মিলিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। শেষরক্ষা হলো না। মুজফ্ফরপুর স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই মারা যান তিনি।
ট্রেন থামার পর তার মরদেহ কাপড় চাপা দিয়ে মুজফ্ফরপুর স্টেশনে নামিয়ে দেওয়া হয়। ট্রেনের সহযাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা স্টেশনে ছোট্ট সন্তানের আপন বলতে কেউ নেই। তাই তো মাকে মাটি থেকে টেনে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করে সে। কারণ অবোঝ শিশু তখনও বোঝেনি মা মারা গিয়েছেন। সে ভেবেছিল মা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাই তো মাকে জাগিয়ে তুলে হয়তো খাবার বা বাড়ি ফেরার আবেদন জানানোর চেষ্টা করছিল একরত্তি।