দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনো ভোলেননি তাঁরা
by চাঁদপুর প্রতিনিধিভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া কালের কণ্ঠ অনলাইন ইনচার্জ গাউস রহমান পিয়াস ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিক হতে পারেননি। তিন দিন পেরিয়ে গেলেও দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনো ভোলেননি তিনি ও তাঁর সন্তান। তারা এখন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছেন। আর দুর্ঘটনায় আহত পিয়াস, তাঁর ছেলে সাম্য ও চালক নজরুল সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই ঘটনায় তাদের বহনকারী প্রাইভেটসহ দুটি গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আর দুর্ঘটনার জন্য দায়ী অন্য গাড়ির চালক হাবিবুর রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
গত রবিবার ভোররাতে রাজধানী ঢাকা থেকে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে দুটি প্রাইভেট কারযোগে যাচ্ছিলেন কালের কণ্ঠ অনলাইন ইনচার্জ গাউস রহমান পিয়াস ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এ সময় জেলার হাজীগঞ্জ পৌরসভার টোরাগড় এলাকায় পৌঁছালে পিয়াসের ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো গ ২৩-৮২৩০) এর ইঞ্জিনের রেডিয়েটর গরম হয়ে যায়। ফলে সড়কের পাশে গাড়িটি থামান চালক মো. আলী। এমন পরিস্থিতিতে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রাইভেট কারও সেখানে থামানো হয়। তবে এ সময় পেছন থেকে দ্রুতগামী যাত্রীবাহী একটি হাইএস (ঢাকা মেট্রো গ ১৫-৫৬৭৬) গাড়ি পিয়াস ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বহনকারী দুটি গাড়িতে প্রচণ্ড গতিতে ধাক্কা দেয়। এতে দুটি গাড়িই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে সড়কের পাশে ডোবায় পড়ে যাওয়া গাউস রহমান পিয়াসের ব্যক্তিগত লাল গাড়িটি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া কালের কণ্ঠের সাদা রঙের প্রাইভেট (ঢাকা মেট্রো গ ২৫-৯৪৯৭) নম্বরের গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনায় পিয়াস, তাঁর ১৪ বছরের ছেলে সাম্য এবং কালের কণ্ঠের গাড়িচালক নজরুল ইসলাম (৪৫) গুরুতর আহত হন। তাদের হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে এখন তারা সবাই ফরিদগঞ্জের গুপ্টি গ্রামে অবস্থান করছেন।
এই বিষয়ে কালের কণ্ঠ অনলাইন ইনচার্জ গাউস রহমান পিয়াস বলেন, দুর্ঘটনার তিন দিন পার হয়েছে ঠিকই। কিন্তু যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছি, সেই দৃশ্য মনে হলেই এখনো ভয়ে গা শিউরে ওঠে। পিয়াস আরো বলেন, এই দুর্ঘটনায় তার ডান উরুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে, ছেলে সাম্যর মুখমণ্ডলে এবং চালক নজরুল ইসলামের শরীরে মারাত্মক আঘাত লেগেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিকিৎসকের পরামর্শে গাউস রহমান পিয়াসের শ্বশুর বাড়িতে সবাই অবস্থান করছেন এবং সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পিয়াসের সহধর্মিণী অ্যাডভোকেট সৈয়দা ইয়াসমিন জেসি বলেন, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই এখন সুস্থতার পথে।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি আলমগীর হোসেন রনি বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই বেশ কয়েকজন পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং এ ছাড়া দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ডোবায় পড়ে যাওয়া একটি এবং আরো একটি গাড়ি উদ্ধার করেছি। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হাইএস গাড়ি জব্দ করে তার চালককে আটক করা হয়। এই ঘটনায় গাউস রহমান পিয়াস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ফলে আটক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া চালকের সঙ্গে তার সঙ্গী মামুন হোসেন নামে আরেকজন ছিল। যে দুর্ঘটনার পরপরই পালিয়ে দ্রুত গাঢাকা দেয়। পুলিশ তাকেও আটকের চেষ্টা করছে।