রোনালদোদের রেকর্ড ছুঁয়েই ফেলবেন লেভারা?
by খেলা ডেস্করোনালদোর জুভেন্টাসের মতো টানা আট লিগ শিরোপার রেকর্ড গড়ার হাতছানি বায়ার্নের
বড় বাধা বলতে এই একটাই বাকি ছিল। সেটি এত সহজে পার হয়ে যাওয়া যাবে, শিরোপার এত কাছে চলে আসা যাবে, তা কি ভাবতে পেরেছিল বায়ার্ন মিউনিখ?
জয়ের ব্যবধানটা অবশ্য ন্যূনতম, ডর্টমুন্ডের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছে বায়ার্ন। তাতে বুন্দেসলিগার শিরোপার নিষ্পত্তিই বুঝি হয়ে গেল! লিগে ম্যাচ বাকি আর ছয়টি, দুইয়ে থাকা বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের চেয়ে এখনই ৭ পয়েন্ট এগিয়ে বায়ার্ন।
রবার্ট লেভানডফস্কি, টমাস মুলারদের এখন হাতছানি ইতালিতে গত মৌসুমে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জুভেন্টাস যে রেকর্ড গড়েছে, সেটি ছোঁয়ার। গত মৌসুমে নিজেদের টানা লিগ জয়ের রেকর্ডটিকে ৮-এ বাড়িয়ে নিয়েছেন রোনালদোরা। জার্মানিতে গত মৌসুমে বায়ার্নও নিজেদের রেকর্ডটাকে বাড়িয়ে ৭-এ নিয়ে গেছে। এবার টানা অষ্টমবারের মতো লিগ জেতার হাতছানি তাদের।
করোনাভাইরাসকে পাশ কাটিয়ে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে জার্মান বুন্দেসলিগা, তা-ও সপ্তাহ দুয়েক হয়ে গেল। এরই মধ্যে দর্শকের অভাব পূরণে কিছু নতুন কৌশলও হাতে নিয়েছে জার্মান দলগুলো। ডর্টমুন্ডের মাঠে কাল ম্যাচেও যেটি চোখে পড়ল। ডর্টমুন্ডের গ্যালারি বিখ্যাত সমর্থকদের তৈরি 'ইয়েলো ওয়াল'-এর জন্য। গ্যালারিটা বিশাল ব্যানারে ঢেকে সেই ওয়াল তৈরির চেষ্টা করা হলো। আর থাকল আলাদা শব্দ। দর্শকেরা যেমন ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তে সমস্বরে চিৎকার করে নিজেদের অনুভূতি জানান দেন, শব্দ ব্যবস্থাপকের মাধ্যমে ঠিক সেরকমই করা হলো! গোল হলে বায়ার্নের চিৎকার বা স্বাগতিক সমর্থকদের হতাশা, গোল মিস হলে আফসোসের সুর, দলের আক্রমণের সময় গলার জোর বাড়ানো – কৃত্তিম সে শব্দ শুনে মাঝেমধ্যে ভুলে যাওয়ার উপক্রম যে মাঠে দর্শক নেই।
ম্যাচেও উত্তেজনা কম ছিল কী! প্রথম মিনিটেই বায়ার্ন গোলকিপার ম্যানুয়েল ন্যয়ার পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে গোল খাওয়ার উপক্রম। সে যাত্রায় ডর্টমুন্ড স্ট্রাইকার আর্লিং ব্রট হরলান্ডের শট গোললাইন থেকে ফেরান জেরোম বোয়াটেং। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচে একমাত্র গোলটা এসেছে ৪৩ মিনিটে। কী দারুণ গোলই না হলো!
দুই দলই টানা ছয় ম্যাচ জিতে মাঠে নেমেছিল। ডর্টমুন্ড আবার সর্বশেষ ছয় ম্যাচে গোল খেয়েছে মাত্র একটি। গোল পেতে বায়ার্নের তাই হয়তো বিশেষ কিছুই দরকার ছিল। সেটিই করলেন রাইটব্যাক থেকে মিডফিল্ডার বনে যাওয়া ইয়োশুয়া কিমিখ! বক্সের বাইরে থেকে জার্মান মিডফিল্ডারের দুর্দান্ত চিপ ডর্টমুন্ড গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে জালে। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের পেনাল্টির আবেদন নাকচ হয়েছে, ডর্টমুন্ডের দাহুদ আর বায়ার্নের লেভানডফস্কি গোলের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু স্কোরলাইনে আর হেরফের হয়নি।
বায়ার্ন তাতেই খুশি। এ জয়ে বায়ার্নের ডাগআউটে লিগে প্রথম ১৮ ম্যাচে ১৫ জয় পেলেন বায়ার্ন কোচ হান্সি ফ্লিক, যে কীর্তি এর আগে ছিল শুধু পেপ গার্দিওলার। জয়ে শিরোপার স্বপ্নও আরও জ্বলজ্বলে ফ্লিকের চোখে, 'গুরুত্বপূর্ণ একটা জয় ছিল এটা। বড় একটা ধাপ পেরিয়েছি আমরা। আমি কি আমার কোচিং ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপা জিতব? আমি এমন কোচ নই যে বেশি আগ বাড়িয়ে ভাবে। তবে সাত পয়েন্ট এগিয়ে থাকা দারুণ অনুভূতি।'
আর ডর্টমুন্ড কোচ লুসিয়ান ফাভরের অনুভূতি, 'শিরোপার দৌড়ে ওদের ধরা অনেক বেশি কঠিন হবে। ছয় ম্যাচ বাকি আর, আমরা সাত পয়েন্ট পিছিয়ে। অনেক অনেক বেশি কঠিন হবে।'
ডর্টমুন্ডের জন্য আরও বড় দুঃসংবাদ, ম্যাচের ৭২ মিনিটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছেড়েছেন হালের সেনসেশন স্ট্রাইকার হরলান্ড। আগের ৯ ম্যাচে ১০ গোল পাওয়া নরওয়েইজিয়ান স্ট্রাইকার গত দুই ম্যাচে গোল পাননি ঠিকই, কিন্তু তাঁকে না পাওয়াটা ডর্টমুন্ডের জন্য বড় ধাক্কাই।