https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/05/27/151820348349e7c2c96362f2516665b2-5ecd621bd9be3.jpg
আয়ুষ্মান খুরানা ও ভূমি পেড়নেকার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

ভূমির চড় খেয়ে আয়ুষ্মানের গাল লাল হয়ে গিয়েছিল

by

ভূমি পেড়নেকারের প্রথম ছবি, ‘দম লাগাকে হাইশা’ মুক্তি পায় ২০১৫ সালে। এর আগে তিনি যশরাজ ফিল্মস প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানে সহকারী কাস্টিং ডিরেক্টর হিসেবে বেশ কয়েক দিন কাজ করেছেন। রণবীর সিং, পরিণীতি চোপড়াদের অডিশন নিয়েছেন। অনেক বড় বড় তারকাকে সামনে থেকে অডিশন দিতে দেখেছেন। তাই আয়ুষ্মানের মনে হয়েছিলে, এই কারণেই প্রথম ছবির একবারে প্রথম ‘অ্যাকশন’ থেকেই ভূমির ভেতর কোনো জড়তা ছিল না। আয়ুষ্মানের ভাষায়, ভূমিই তাঁর জীবনে দেখা সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী সহশিল্পী।

এই ছবির ‘সুন্দর সুশীল’ শিরোনামের গানে আয়ুষ্মান আর ভূমির সঙ্গে আরও আরও প্রায় ৪০টি জুটি শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিল। তাদের অনেকেই এই গানের শুটিংয়ে অংশ নিয়ে খুশি। কিন্তু কেউ কেউ ভয়ে ছিল, যে তাঁদের বুঝি সত্যি সত্যি বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। পরে আয়ুষ্মান ও ভূমি তাঁদের বোঝালেন, যে তাঁরাও একইভাবে বিয়ে করছেন, আর এভাবে সত্যি সত্যি বিয়ে হয় না!

‘মোহ মোহ কী ধাগে’ গানের শুটিংয়ের দিন খুব বাতাস বইছিল। আর দৃশ্যটা এমন ছিল, আয়ুষ্মান, ভূমিকে মোটর সাইকেলে নিয়ে একটা ব্রিজ পার হবেন। সবাই খুব টেনশনে ছিল। আয়ুষ্মানের ভাষায়, ‘রোডিশের চেয়ে কোনো দিক থেকে কিছু কম ছিল না, বরং সব দিক দিয়েই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিন্তু ভূমি বাইকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ওর ওজনের জন্য সেতু দোলা কমে গেল। আর আমার জন্য সবকিছু সহজ হয়ে গেল। এক টেকেই শট ওকে হলো। আর আমরা মুখে হাসি নিয়ে, হাততালি দিয়ে হাপ ছেড়ে বাঁচলাম।’

এই গানের শিল্পী মোনালি ঠাকুর পুরোনো দিনের কথা মনে করে এই গান নিয়ে বলেন, ‘আমি তখন কলকাতা থেকে মুম্বাই এসেছি। একটা রিয়েলিটি শোয়ের (ইন্ডিয়ান আইডল) প্রতিযোগী হিসেবে। আনু মালিক (এই সিনেমার মিউজিক ডিরেক্টর) আমাকে কথা দিয়েছিলেন যে উনি আমার গলা, মেধার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে আমাকে দিয়ে দারুণ একটা গান গাওয়াবেন। আর এর সাত বছর পর উনি তাঁর প্রতিজ্ঞা রাখলেন। আমাকে ‘মোহ মোহ’ গানটি গাইতে দিলেন। মানুষের হৃদয় স্পর্শ করার জন্য একটা সেরা গানের যা যা থাকা উচিত, তার সবই আছে এই গানে। আর আমিও নিজেকে উজাড় করে দিয়ে গাইলাম। আমার স্বপ্ন পূরণ হলো। এটা আমার জীবনের সেরা গানগুলোর একটা।’

https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/05/27/45f91d9b2443bf630c891071183617d0-5ecd621bc5eec.jpg
বাস্তব জীবনে আয়ুষ্মান ও ভূমি ভালো বন্ধু। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

আয়ুষ্মান কেন এই সিনেমাকে হ্যাঁ বললেন? ‘কারণ, আমি সব সময় এমন সব সিনেমার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চেয়েছি, যেগুলো ভারতের বড় পর্দায় আগে কখনো দেখা যায়নি। আর এমন একটা গরিব, দ্বিধাদ্বন্দ্বে, নানা সংকটে ভোগা ভালোবাসার কথা যে এত চমৎকারভাবে বলা যেতে পারে, আমার জানাই ছিল না। আমি তাই মনেপ্রাণে কাজটা করতে চেয়েছি। ৬৭ কেজি ওজনের আমি ৮৬ কেজির ভূমিকে পিঠে করে দৌড়েছি। যা কিছু আমার প্রাথমিকভাবে অসম্ভব বলে মনে হয়, আমি সেসব কিছুই স্পর্শ করতে চেয়েছি।’

এই সিনেমায় একটা দৃশ্য ছিল এমন: আয়ুষ্মান খুরানা তাঁর বন্ধুদের কাছে বউয়ের যাবতীয় দুর্নাম করছেন, আর ভূমি তা শুনে ফেলে আয়ুষ্মানকে এসে কষে একটা চড় বসিয়েছেন। আয়ুষ্মানও পাল্টা চড় বসিয়েছে। কিন্তু আয়ুষ্মান ভূমিকে চড় মারার আগেই শট ‘এনজি’ হয়ে যায়। একবার, দুবার, তিনবার করে ২০টা চড়ের পর অবশেষে শটটা ওকে হলো। এর মাঝে আয়ুষ্মানের গাল লাল হয়ে গেল। প্রতিবার শট এনজি (নট গুড) হওয়ার পর ঠান্ডা পানির ছিটা বা বরফ দিতে হতো। একবার তো শট ‘রিয়েলিস্টিক’ করতে গিয়ে ভূমি এমন জোরে আয়ুষ্মানের চড় বসালেন যে রীতিমতো মলম লাগাতে হলো। তারপর ২০তম বার গিয়ে শট ‘ওকে’ হলো। এত কিছুর পরেও আয়ুষ্মান ও ভূমি উভয়েই বলেছেন, তাঁদের জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা এই ছবির সেটের। আর এই সিনেমার পর থেকে বাস্তবের জীবনেও আয়ুষ্মান ও ভূমি ভালো বন্ধু হলেন।