তবুও ঈদ আনন্দের খোঁজে রাজধানীর রাস্তায় তরুণ-তরুণীরা
by হাসনাত নাঈমকরোনাভাইরাসে সামাজিক দূরত্ব ধরে রাখতে রাজধানীতে অধিকাংশ মানুষ ঘরবন্দি ঈদ উদযাপন করলেও কিছু কিছু মানুষ তবুও আনন্দের খোঁজে বাইরে বেরিয়েছেন। সোমবার (২৫ মে) ঈদুল ফিতরের দিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, যারা বের হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই বয়সে তরুণ-তরুণী। তারা যেন আনন্দে বাঁধনহারা। কোথাও-কোথাও বাইকে ও ব্যক্তিগত কারে দেখা মিলেছে অনেক ছোটপরিবারের।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট স্থবিরতার মধ্যেই পালিত হয়েছে এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঘরে থেকেই ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা তো প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগে থেকেই রয়েছে। তবুও একটু আনন্দের খোঁজে বাইরে বের হয়েছেন তরুণ-তরুণীরা।
রাজধানী ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে তরুণ-তরুণীরা ১০-১২ জন একত্রিত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেলফি তুলছেন। ফাঁকা রাস্তায় এক মোটরসাইকেলে হেলমেটবিহীন তিন-চার জন। হাইড্রলিক হর্ন বাজিয়ে ছুটে চলেছেন তারা। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেও ঘুরতে দেখা গেছে অনেককে। মানুষের আনাগোনায় জমে ওঠে হাতিরঝিলও।
সোমবার দুপুর একটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হঠাৎ একটি অ্যাম্বুলেন্স থামতে দেখা যায়। ৮-১০ জন তরুণ হুড়মুড় করে বেরিয়ে আসেন। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দাঁড়িয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেলফি তোলেন তারা।
বেলা ৩টার দিকে ধানমন্ডি লেকে দল দলে তরুণদের সেলফি তুলতে দেখা যায়। পাশাপাশি বাইক রেসিং এবং খোলা জিপে গাদাগাদি করে মাথা উঁচিয়ে ঘুরতে দেখা যায় অনেককে। আর হাতিরঝিল! সেখানে গিয়ে তো মনেই হয়নি, করোনাভাইরাস রোধে সরকারের কোনও নির্দেশনা আছে। লোকে লোকারণ্য।
করোনারভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে কেন এভাবে ঘোরাঘুরি করছেন এম প্রশ্নের উত্তরে কয়েকজন বলেন, আজ তো ঈদের দিন। পরিচিতদের সঙ্গে ঘুরছি। আমরা যারা ঘুরছি, কারোরই করোনাভাইরাসের উপসর্গ নেই।
ধানমন্ডি লেকে কথা হয় কলেজপড়ুয়া সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে। ছয় বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, 'দীর্ঘ দিন পর আজ বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। বন্ধুদের সঙ্গে এখানে এসেছি। এদের কারোরই করোনাভাইরাসের উপসর্গ নেই। এর ফলে তেমন একটা অসুবিধা হবে না।'
টিএসসি মোড়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঘুরতে আসাদের একজন রাসেল সরকার। তিনি বলেন, 'আমরা সবাই একই কলোনিতে থাকি। কলোনিতে কেউ এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। ঈদের দিন হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বের হয়েছি ঢাকা শহর ঘুরতে।'
হাতিরঝিলে কথা হয় বাঁধন সরকার নামে এক তরুণের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'আমার বাসা রামপুরায়। লকডাউনে দীর্ঘসময় বাসা থেকেই বের হতে দেননি বাবা-মা। আজ কোনোরকমে বের হয়েছি। ঘুরতে এসেছি এখানে।'
হাতিরঝিল এলাকায় হেলমেট না থাকা এবং একই মোটরসাইকেলে তিন জন আরোহণ করায় তাদের থামায় হাতিরঝিল থানা পুলিশ। ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাদের। সেনাবাহিনীকেউ হাতিরঝিল এলাকায় টহল দিতে দেখা যায়।