৯ দিনের ব্যবধানে সাতক্ষীরায় করোনা রোগী বেড়েছে ১৭ গুণ
খুলনা বিভাগে মোট পজিটিভ ৪২১, মৃত্যু ৮
by খুলনা প্রতিনিধিখুলনা বিভাগে করোনা পজিটিভ হু হু করে বাড়ছে। ৯ দিনের ব্যবধানে খুলনা ও বাগেরহাট প্রায় ৩ গুণ পজিটিভ রোগী বেড়েছে। এ সময়ে সাতক্ষীরায় বেড়েছে ১৭ গুণ। তবে এ সময়ের মধ্যে কেবল মাগুরা জেলায় রোগীর সংখ্যা স্থিতিশীল আছে। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে এ চিত্র দেখা গেছে।
গত ১৬ মে'র প্রতিবেদনে খুলনা জেলায় করোনা পজিটিভ ছিল ১৯ জন। আর ২৫ মে'র প্রতিবেদনে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে। সাতক্ষীরায় ১৬ মে ছিল ২ জন পজিটিভ। আর ২৫ মে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে। একই সময়ে বাগেরহাটে ৭ জন থেকে পজিটিভের সংখ্যা বেড়ে ঠেকেছে ২৩ জনে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আম্পান ঝড়ের কারণে বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলোর আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষজন গাদাগাদি করে থাকার কারণে এসব জেলায় করোনার সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক রাশিদা সুলতানা জানান, গত ১০ মার্চ থেকে খুলনায় করোনার হিসাব শুরু হয়। ৭ এপ্রিল থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত এ বিভাগে ২০২ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। গত ২৫ এপ্রিলের প্রতিবেদনে এ বিভাগে পজিটিভ ছিল ৫১ জন। আর ২৮ এপ্রিলের প্রতিবেদনে পজিটিভ হয় ১১২ জন। আর ৯ মে'র প্রতিবেদনে পজিটিভ শনাক্ত হয় ২০২ জন।
তিনি জানান, ১৪ মে দেওয়া প্রতিবেদনে করোনা পজিটিভ ছিলেন ২৫৪ জন এবং ১৬ মে দেওয়া প্রতিবেদনে এই সংখ্যা বেড়ে হয় ৩০১ জন। এর ৯ দিন পর ২৫ মে দেওয়া প্রতিবেদনে করোনা পজিটিভ এখন ৪২১ জন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় (রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) বিভাগে ১৪ জন নতুন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় ৫ জন, বাগেরহাটে ৪ জন, সাতক্ষীরায় ১ জন, যশোরে ১ জন, কুষ্টিয়ায় ১ জন ও চুয়াডাঙ্গায় ২ জন রয়েছেন। পাশাপাশি এ ২৪ ঘণ্টায় এ বিভাগে ২০৯ জনকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২ জন রয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে। আর ১৭৫ জনকে কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ১৪ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৯ জনকে।
তিনি জানান, গত ১০ মার্চ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত খুলনা বিভাগে ৪২১ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। এদের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৯৭ জন করোনা পজিটিভ নিয়ে এ বিভাগের শীর্ষে এখন যশোর জেলা। ৮৫ জন পজিটিভ নিয়ে ২য় স্থানে চুয়াডাঙ্গা। ৪৭ জন পজিটিভ নিয়ে ৩য় অবস্থানে রয়েছে ঝিনাইদহ। এছাড়া নড়াইলে ২২ জন পজিটিভ , কুষ্টিয়ায় ৩৫ জন পজিটিভ, খুলনায় ৪৮ জন পজিটিভ, মাগুরায় ১৯ জন পজিটিভ, মেহেরপুরে ১১ জন পজিটিভ, বাগেরহাটে ২৩ জন পজিটিভ এবং সাতক্ষীরায় ৩৪ জন পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে যে ৮ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে খুলনা জেলায় ছিলেন ৩ জন। অন্যরা চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, মেহেরপুর,বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
এছাড়া এ বিভাগে এ পর্যন্ত ৩২৪১৫ জনকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩২২৫ জন রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে। আর ২৮৯৯৩ জনকে কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আর আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ৩৩৭ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ১৩৭ জনকে।
উল্লেখ্য, খুলনা বিভাগে ১০ মার্চ থেকে করোনার হিসাব শুরু হয়। আর ঢাকার রিপোর্টে চুয়াডাঙ্গায় আসা ইতালি প্রবাসী প্রথম করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন ১৯ মার্চ। তারপর দ্বিতীয় করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন ১৩ এপ্রিল খুলনার এক তাবলিগ ফেরত অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। আর ২৮ এপ্রিল ১১২ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়। প্রথম ১শ’ হতে সময় লাগে ৩৯ দিন। দ্বিতীয় ১শ’ হয় ১২ দিনে (৯ মে)। আর তৃতীয় ১শ’ হল ৭ দিনে (১৬ মে)। চতুর্থ ১শ’ হল ৮ দিনে (২৪ মে)।