সুন্দরগঞ্জে কালবৈশাখীর তাণ্ডব
by সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিগাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে শতাধিক ঘরবাড়ি ও মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বেশকিছু গ্রামের কাঁচাপাকা ঘর-বাড়ি, আম, লিচু, কলা, বোরো ধান, ভুট্টা ও বাদাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে ঘটনার খোঁজখবর নিতে ঈদের নামাজের পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম লেবু ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী লুতফুল হাসান। এ ছাড়াও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করতে মাঠে ঘুরে তালিকা করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল রবিবার রাত ১১টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক দফায় তাণ্ডব চালায় কালবৈশাখী ঝড়। দফায় দফায় তাণ্ডব চালানো কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয় দেড় শতাধিক কাঁচাপাকা ঘর-বাড়ি। দুমড়ে মুচড়ে গেছে অনেক বাড়িঘর। তিনটি ইউনিয়ন শান্তিরাম, শ্রীপুর ও ছাপরহাটির বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ওইসব এলাকায় অনেকের ঘরের ছাউনি বাতাসে উড়ে গেছে। অনেক পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৌসুমী ফসলসহ বোরো ধানের আবাদ। এতে বেশকিছু মৌসুমী ফল আম, লিচু ও কলা বাগান দুমড়ে মুচড়ে গেছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে অনেক জায়গায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
অন্যদিকে কালবৈশাখী ঝড়ের পর থেকেই বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। টানা ১৬ ঘণ্টা পার হলেও এখনো কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়নি। এমনকি ঝড়ের কারণে বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট সেবা। অনেক এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিড়ম্বনায় পড়েছে মোবাইল ব্যবহারকারীরা। অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে খোলা জায়গায় বসে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনো কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাকা ধান মাটিতে শুয়ে যাওয়ায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন তারা। এ ছাড়াও লিচু ও কলা বাগান দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ মেটানো দুর্সাধ্য হবে বলেও জানান তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী লুতফুল হাসান বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের প্রভাবে দেড় শতাধিক কাঁচাপাকা ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও গাছপালা উপড়ে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়। আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।