https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/05/26/820e1e16f03ed8d5c881c2eb2abd53f8-5ecc129941dbd.jpg
স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে আল-ইমরান রুহুল ইসলাম। ছবিটি আগের হলেও করোনামুক্ত হয়ে সন্তানকে কোলে নিতে পারাই ছিলে আজকের ঈদের আনন্দ। ছবি: সংগৃহীত

করোনাকে জয় করলেন কেন্দুয়ার ইউএনও

by

করোনাকে জয় করলেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-ইমরান রুহুল ইসলাম। গতকাল রোববার রাতে জেলা প্রশাসক ফোন করে তাঁকে করোনা পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ এই সুসংবাদ দেন। ১১ মে তাঁর করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছিল।

প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আক্রান্ত হওয়ার আগে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে ঘরমুখী করতে, মাস্ক, সাবান-হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, বাজার নিয়ন্ত্রণ ও গণপরিবহন বন্ধ রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, অসহায়দের ঘরে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিতে দিন-রাত ছুটে বেড়িয়েছেন আল-ইমরান রুহুল ইসলাম। নিজের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরও তিনি দায়িত্ব থেকে নিবৃত্ত হননি। কোয়ার্টারের নিচতলায় আইসোলেশনে থেকে দাপ্তরিক কাজ ছাড়াও অন্য আক্রান্তদের খোঁজখবর নেওয়াসহ করোনা প্রতিরোধ কমিটির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন।

এসব বিষয় নিয়ে মুঠোফোনে কথা হয় আল-ইমরান রুহুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে জানান, হালকা কাশি ও হালকা গলাব্যথা ছাড়া তাঁর তেমন কোনো উপসর্গ ছিল না। জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে করোনা পজিটিভ শব্দটি শুনে তিনি মোটেই ভীত বা ভেঙে পড়েননি। বরং দৃঢ় মনোবল নিয়ে পরিবারকে বুঝিয়ে কোয়ার্টারের নিচতলায় সবকিছু আলাদা করে আইসোলেশনে চলে যান। তবে তাঁর অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী ও পাঁচ বছরের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কিছুটা বিচলিত ছিলেন। পরে তাঁদের নমুনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলে তিনি স্বস্তি পান। স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১২ দিন আইসোলেশনে থেকে পরপর দুবার নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত না হওয়ায় তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

প্রথমেই তিনি সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স জাতীয় ওষুধ খাওয়া, পরিবারসহ স্বজন আর শুভানুধ্যায়ীদের অনুপ্রেরণা আর ভালোবাসায় তিনি করোনাকে জয় করেছেন। এ সময় প্রোটিন ও ভিটামিন সি জাতীয় খাবার, গরম পানি, লং-আদা দিয়ে চা এসব বেশি খেয়েছেন। গোসল করেছেন গরম পানি দিয়ে। দাপ্তরিক কাজ ছাড়াও লেখালেখি ও বই পড়ে সময় কেটেছে তাঁর। করোনায় কোনো ধরনের ভয় বা গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। মনোবল শক্ত করে নিয়ম মেনে চললে সহজেই করোনা জয় করা যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এদিকে গত ১০ এপ্রিল থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত জেলায় ২০৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৬৪ জন সুস্থ হয়েছেন। দুজন মারা গেছেন।