কিশোর কবিতা
চলো যাই দূর বনে
by সিকদার নাজমুল হক
শহরের মায়া ছেড়ে, চলো যাই দূর বনে লাউয়াছড়ায়,
সেই বনে সারি সারি গাছগুলো কী ভীষণ আবেশে জড়ায়!
সেই বনে নিরিবিলি সকাল দুপুর কাটে, সন্ধ্যা গড়ায়,
রাত এলে কারা যেন ঘন কালো আঁধারের ঘোমটা পরায়।
অমানিশা আন্ধারে সেই বনে নেমে আসে রাহুর কবল,
আন্ধার কেটে গেলে চারপাশে হেসে ওঠে জোছনা ধবল।
সেই বনে থাকে এক দামাল খাসিয়া ছেলে, সুঠাম সবল,
এমন জোসনারাতে আনমনে গান করে, বাজায় তবল।
সেই বনে মেঘ ভাসে, মেঘ যেন আকাশের রুপোলি বাহন,
হঠাৎ বিষ্টি এলে ভিজে ভিজে সারা বন করবে গাহন।
বিজলিরা চমকালে পাখিদের চোখে যেন চকিত চাহন,
থেমে যায় ঝিঁঝিদের একটানা কলরব, সপ্তকাহন।
সেই বনে ঝড় আসে, ঝড় যেন রাক্ষসী, বন্য দাঁতাল,
বাজ পড়ে থেকে থেকে, কী ভীষণ বায়ু ছোটে রুদ্র-মাতাল!
বুনোপথে উড়ে যায় পথচলা কাঠুরের মাথার মাথাল,
কেঁপে ওঠে চারদিক, গাছগুলো দুলে ওঠে উথালপাথাল।
হিমহিম ভোরবেলা যখন মিহিন আলো ছড়ায় অরুণ,
সেই বনে হেঁটে যায় সুপুরির থোকা হাতে পাহাড়ি তরুণ।
এমন শীতল ভোরে, তোমাকে ডাকবে কাছে হিজল, বরুণ,
দেখে যেয়ো সেই বনে মথুরা পাখির চোখ কতটা করুণ।
সেই বনে সারাদিন হাতছানি দিয়ে ডাকে সেগুন, আগর,
দেখে যেয়ো সেই বনে বানরের ছানাগুলো কেমন ডাগর!
হরিণের মায়াচোখে খেলা করে কত নীল অথই সাগর—
দেখে যেয়ো একবার হে আমার ভিনদেশি শহুরে নাগর।