গাছের গুঁড়ি উদ্ধারে পুলিশ

সওজের গাছ কাটতে বললেন ইউএনও, কাটা গাছ চলে গেল 'স' মিলে

by

সিরাজগঞ্জে চৌহালী উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ বাজারসংলগ্ন রেহাই পুখুড়িয়ায় এলাকায় ভাঙনের আশঙ্কায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজে) কিছু গাছ কেটে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছিলেন চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ। গাছের টেন্ডার পরে হওয়ার কথা ছিল। তবে দায়িত্ব পাওয়া দুই জনপ্রতিনিধি গাছ কেটে সংরক্ষণ না করে আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে স্থানীয় 'স' মিল থেকে গাছের ২৫টি গুঁড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

অভিযোগ রয়েছে, ভাঙনে বিলীন হওয়ার অজুহাতে প্রায় দুই সপ্তাহ থেকে চৌহালী উপজেলা সদরের রেহাইপুখুরিয়া বাবলাতলা থেকে সম্ভুদিয়া ও দেওয়ানগঞ্জ বাজার পর্যন্ত থাকা শতাধিক ইউক্যালিপটাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলা হয়। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার ও বাগুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাহার সিদ্দীকিসহ বেশ কয়েকজন এই গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে তাদের গাছ কেটে গাছগুলো সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। তারা তা না করে 'স' মিলে গোপনে গাছের গুঁড়িসহ বিভিন্ন অংশ বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ পেয়ে শনিবার বিকালে রেহাই পুখুরিয়ার নুরু মিয়ার 'স' মিল থেকে ২৫টি গুঁড়ি উদ্ধার করে চৌহালী থানা পুলিশ।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা বাবুল আক্তার বলেন, ভাঙনের আশঙ্কায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে জরুরি ভিত্তিতে গাছ কাটা হচ্ছে। গাছগুলোর পরে টেন্ডার করা হবে। এসব গাছের কোনো অংশ বিক্রির সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ কর্তৃক গাছ উদ্ধারের বিষয়টি আমি জানি না।

বাগুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল কাহার সিদ্দিকী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট সবাই অবগত আছেন তাই গাছ কেটে বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের সুযোগ নেই। তা ছাড়া গাছ কাটার সমস্ত হিসাব সংরক্ষণ আছে বলেও তিনি দাবি করেন। 

এদিকে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রাং বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে ভাঙনের আশঙ্কার কথা বললেও পরবর্তী সময়ে গাছ কেটে সংরক্ষণের বিষয়ে আমাদের কেউ জানায়নি। চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে 'স' মিল থেকে ২৫ পিস ইউক্যালিপটাস গাছের গুঁড়ি জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের জিম্মায় রাখা হয়েছে। গাছ কেটে নির্দিষ্ট স্থানে না রেখে 'স' মিলে রাখার বিষয়টি সন্দেহজনক। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

গাছ কাটার নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ বলেন, ভাঙনে বিলীন হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে গাছ কেটে সংরক্ষণের জন্য বলা হয়েছিল। কাউকে গাছের গুঁড়ি 'স' মিলে রাখার জন্য বলা হয়নি বলে জানান তিনি। তবে যদি কোনো অনিয়ম  হয়ে থাকে তবে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।