তালেবানের প্রস্তাবে সমর্থন কাতার, জার্মানিসহ ৫ দেশের
by বিদেশ ডেস্কআফগানিস্তানে ঈদ উপলক্ষে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে কাতার ও জার্মানিসহ পাঁচ দেশ। রবিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থানের জানান দিয়েছে তারা। এই দেশগুলো আফগান শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে যুক্ত।
আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তালেবানের এ প্রস্তাবকে ব্যবহারের আবেদন জানিয়েছে পাঁচ দেশ।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরদানকারী দেশগুলো হচ্ছে কাতার, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, নরওয়ে ও উজবেকিস্তান।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানে সংঘাত বন্ধে এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে আমরা সব পক্ষকে আগামী দিন ও সপ্তাহগুলোতে বিলম্ব না করে আন্তঃআফগান শান্তি আলোচনায় আরও ভূমিকা রাখবার অনুরোধ জানাচ্ছিI
এর আগে ঈদ উপলক্ষে গত শনিবার আফগান সরকারের সঙ্গে তিন দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে তালেবান। রবিবার ঈদের দিন থেকে এই অস্ত্রবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দেয় দলটি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সরকারি বাহিনীর ওপর তালেবানের হামলা জোরদার হওয়ার মধ্যেই এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘কোথাও কোনও শত্রু ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো যাবে না। তবে যদি শত্রুপক্ষ হামলা চালায় তখন নিজেদের রক্ষায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি স্বাক্ষরের পর আফগান ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আশা করেছিলেন যে, সহিংসতা হয়তো কমে আসবে। কিন্তু বন্দি বিনিময়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে আফগান সরকারের অনীহায় শান্তি আলোচনা থমকে গেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশটিতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনাও বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে তার উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনা। এটি দেশটিতে ১৮ বছর ধরে চলে আসা যুদ্ধের ইতি টানতে পারতো।
চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, মে মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে ৫ হাজার মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হবে। অদূর ভবিষ্যতে তিনি তালেবান নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। আর তালেবানরা চুক্তির শর্ত মেনে চললে ১৪ মাসের মধ্যে মার্কিন এবং ন্যাটো সেনারা আফগানিস্তান ছাড়ার কথা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের বিরুদ্ধে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে রাজি হয়। দলটির ওপর জাতিসংঘের আলাদাভাবে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বাতিল করতেও কাজ করার কথা ছিল ওয়াশিংটনের। বিনিময়ে তালেবানরা অঙ্গীকার করে, তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তারা আল-কায়েদা বা অন্য কোনও চরমপন্থী গোষ্ঠীকে কাজ করতে দেবে না।
মার্কিন কর্মকর্তারা তালেবান ও আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রথম শর্ত হিসেবে দুই পক্ষের মধ্যে বন্দী বিনিময়ে রাজি হয়। যদিও আফগান সরকার ওই আলোচনায় অংশ নেয়নি। এখন কাবুল চুক্তি অনুযায়ী বন্দি বিনিময়ে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে।
গত এপ্রিলে ঐতিহাসিকভাবে মুখোমুখি আলোচনায় বসে দুই পক্ষ। কিন্তু তালেবানরা আলোচনা না করেই চলে যায়।
আফগান সরকারের দাবি, তালেবানের দাবি-দাওয়া অযৌক্তিক। প্রশাসনের পক্ষে সমঝোতা দলের একজন সদস্য বলেন, তালেবান তাদের শীর্ষ ১৫ জন কমান্ডারের মুক্তি দাবি করেছে যারা বড় বড় হামলার পেছনে জড়িত ছিল। অন্যদিকে তালেবানের মুখপাত্রের দাবি, নানা কারণ দেখিয়ে তাদের বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত করছে কাবুল।