https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/05/25/c3c4ab5e195868a5afaacda85ca272e7-5ecbe0abdef25.jpg
ঘরবন্দী লুমিম তার মামার সঙ্গে ঘরে বসেই ভিডিও কলের মাধ্যমে ঈদের আনন্দ শেয়ার করছে। ছবি: লেখক

এবার ভার্চ্যুয়াল ঈদ

by

সকাল হলেই ঘুম থেকে উঠে নতুন জামা পরা। পরিবারের বড়–ছোটরা মিলে একসঙ্গে ঈদের জামাতে যাওয়া। নামাজ শেষে কোলাকুলি করা। ঘুরে বেড়ানো। বন্ধু, আত্মীয়স্বজনের বাসায় সেমাই–পায়েস খাওয়া। অনেক মজা, আনন্দ। হ্যাঁ, আজ ঈদুল ফিতর। এবার সবকিছুই হবে, তবে সেটি ভার্চ্যুয়াল জগতে।

আমরা জানি ঈদ মানে আনন্দ, উৎসব ও আয়োজন। তবে এ বছর ঠিক বিপরীত একটি ঈদ উদযাপন করছি আমরা। বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জন্য এমন বিবর্ণ একটা ঈদ এসেছে, যা আগে কখনো আসেনি। অদ্ভুত এক অন্ধকারে ঢেকে গেছে পৃথিবী। চারদিকে মৃত্যু, ক্ষুধা আর হাহাকারের মিছিল। এবারের ঈদ উদযাপন একটু ভিন্ন।

করোনা মহামারি কখন কাকে কীভাবে সংক্রমিত করবে, কে জানে! জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তাই বাইরে বেরোতে মানা। ঘরে বসে পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করছে এবারের ঈদ। সবাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা মুঠোফোনে এক ভিন্ন রকম অনুভূতি নিয়ে উদযাপন করছে এ বিশেষ দিনটি।

করোনা বৈশ্বিক এই দুর্যোগের সময় আমাদের জীবন ঘরবন্দী। ঘরে বসেই দেশের মানুষ মোকাবিলা করছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের। তাই বলে কারও উদযাপন থেমে নেই। সবাই ঘরে বসেই পারিবারিকভাবে উদযাপন করছে এ দিনটি। যেহেতু ঈদে অন্যের বাড়িতে যাওয়া যাবে না, ভাইবোনেরা বা বন্ধুরা একটা জুম মিটিং করে ফেলছে। ভিডিও কলের মাধ্যমে ঈদের আনন্দ শেয়ার করছে একজন আরেকজনের কাছে।

প্রতিবছর এই বিশেষ দিনটিতে প্রাণে প্রাণ মিল বন্ধন হয় ধনী–গরিবের। এককাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে সবাই। কিন্তু এবারের ঈদ যেন পুরো ভিন্নমাত্রায়। যার যার বাসায় কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, মেসেঞ্জারে। এবারে সবাই ঈদ উদযাপন করছে ঘরে ঘরে, নিজের মতো করে। ডিজিটাল এই দুনিয়ায় আপ্যায়ন, গল্প, ডেটিং, শুভেচ্ছা ও উপহার বিনিময়—সবই চলছে পারে ভার্চ্যুয়ালি।

ঈদ সালামির বেলায়ও ভার্চ্যুয়ালিটি যেন থেমে নেই। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধমে ঘরে বসেই পরিবারের বড়দের কাছে আপনি সহজেই পেয়ে যাচ্ছেন এটি।

বাংলার গ্রাম, শহর, বন্দর—সব জায়গায় আজ উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। তবে সেটা একটু আলাদাভাবে। নতুন জামাকাপড়, সেমাই–পায়েস, হরেক রকম খাবার—সবই হবে, তবে তা যার যার ঘরে।

আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার হিসাব চুকিয়ে ঈদ এসেছে। নির্বিশেষে সর্বজনীন ঈদ উদযাপন হবে ঘরে ঘরে মেতে সবাই গাইবে নিরাপদ এক বাংলার জয় গান।

আসুন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচি একসঙ্গে একা থেকে। আর সেটাই হবে এই করোনা আক্রান্ত পৃথিবীতে ভার্চ্যুয়াল ঈদের আনন্দ।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়