ঘরবন্দি ঈদ, নগরীর ফুলেরা আরো উজ্জ্বল-বাড়ছে দুর্বা
by খান মুহাম্মদ রুমেলউদ্বেগ আর বিষণ্ণতায় মোড়ানো এক ঈদ এসেছে পৃথিবীতে। উৎসবের আড়ম্বরে নয়, কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজনে নয়- এ ঈদ বিচ্ছিন্নতার, এ ঈদ ঘরোয়াভাবে উদযাপনের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিচ্ছিন্নতা আর একাকিত্বকে নিরবে মেনে চলার মাঝেই নিহীত আগামীর উদযাপনের বীজ। তাই বাইরে নয়, ঘরে বসেই ঈদ উদযাপনের আহ্বান তাদের।
ঈদ এলো এবার সঙ্গ নিরোধ সময়ে। নামাজ আদায় করে একে অপরকে আলিঙ্গন করার যে রেওয়াজ, এবারের ঈদগাহে সেই সুন্দর অনুপস্থিত। প্রতিবেশী, স্বজন আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে মিষ্টিমুখ করা কিংবা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মুহূর্ত ঢেকে রেখেছে বিষণ্ণতার মেঘ। শতাব্দীর ভয়াবহতম করোনা মহামারি আমাদের শারীরিক দূরত্বে রাখলেও ঘুচিয়ে দেয়নি মনের দূরত্ব।
কবি মাসুদুজ্জামান বলেন, 'এবারকার ঈদ এসেছে একটা ভিন্ন রূপ নিয়ে। করোনায় অসহনীয় দিন যাপন করছি আমরা।'
ধরে নেয়া হয় প্রতিবছর ঈদে রাজধানী ছেড়ে যান অর্ধেকের বেশি নাগরিক। লঞ্চ, ট্রেন, বাসে থাকে না তিল ধারণের ঠাঁই। এবারো স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে কিছু মানুষকে দেখা গেছে ঘরে ফিরতে। তাদের এই ঘরে ফেরা যে বিপজ্জনক, সেই সংকেত বরাবরই দিয়ে গেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসক ও কবি ডা. রোমেন রায়হান বলেন, 'কিছুটা ছড়ার ভাষাতেই বলতে হচ্ছে ‘বাঁচাবে না ভেন্টিলেটর অক্সিজেনের নল, ঘরেই থাকো ঘরেই থাকো ডাকুক শপিংমল। নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা এবার থাকুক বাদ, তুমি যদি বেঁচে থাকো বাঁচবে তোমার স্বাদ।’ আসুন এই করোনা যুদ্ধে সবাই বেঁচে থাকি।'
বিচ্ছিন্নতার এই কালে ঘরবন্দি মানুষ। কিন্তু নগরীর প্রাচীনবৃক্ষগুলো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। পৃথিবীর এই বিশ্রামকালে ফুলেরা ফুটেছে আরো উজ্জ্বল হয়ে। দুর্বাঘাসগুলো বেড়ে উঠেছে বেয়াড়াভাবে। সবাই অপেক্ষায়- উচ্ছ্বাসের দিন আসবেই।