রোহিঙ্গাদের রক্ষায় নিজেদের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে আইসিজেকে জানাল মিয়ানমার
by অনলাইন ডেস্করোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় নিজেদের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে (আইসিজে) জানিয়েছে মিয়ানমার। একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে বিষয়টি জানানো হয়। তবে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা গৃহীত পদক্ষেপগুলো কী, তা প্রকাশ করা হয়নি। আইসিজেতে জমা দেওয়া মিয়ানমারের এ ধরনের প্রতিবেদন এটাই প্রথম।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য জানায়। আইসিজের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা বলা হয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জনুয়ারি আইসিজে গণহত্যার আলামত পাওয়া গেছে উল্লেখ করে। এবং মিয়ানমারের প্রতি চার দফা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের পর মিয়ানমার এই প্রথম প্রতিবেদন জমা দিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, চার মাসের মধ্যে মিয়ানমার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে এ প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে ঠিক কী বলা হয়েছে তা আইসিজের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। অন্যদিকে মিয়ামানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিষয়টি রাষ্ট্রীয় গোপনীয় বিষয় বলে রয়টার্সের কাছে মন্তব্য করেন। এর আগে গত শুক্রবার মিয়ানমারের এক সেনা কর্মকর্তা বলেছিলেন, তারা প্রতিবেদনের বিষয়ে সরকারকে 'পরিপূর্ণ ও সঠিক' তথ্য সরবরাহ করেছে।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার গণহত্যা চালিয়েছে বলে আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। ডিসেম্বরে এই ব্যাপারে পক্ষ–বিপক্ষে শুনানি হয় আইসিজেতে। পরে ২৩ জানুয়ারি ১৭ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বিচারিক দল ৪টি অন্তবর্তী আদেশ দেন। পাশাপাশি চার মাসের মধ্যে আদালতের আদেশ অনুযায়ী মিয়ানমার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা আদালতকে জানাতে বলা হয়েছিল।
অন্তর্বর্তী ব্যবস্থাগুলো হলো:
১. গণহত্যা সনদের বিধি ২ অনুযায়ী মিয়ানমারকে তার সীমানার মধ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যা, জখম বা মানসিকভাবে আঘাত করা, পুরো জনগোষ্ঠী বা তার অংশবিশেষকে নিশ্চিহ্ন করা এবং তাদের জন্মদান বন্ধের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ থেকে অবশ্যই নিবৃত্ত থাকতে হবে।
২. মিয়ানমারকে অবশ্যই তার সীমানার মধ্যে সেনাবাহিনী বা অন্য কোনো অনিয়মিত সশস্ত্র ইউনিট বা তাদের সমর্থনে অন্য কেউ যাতে গণহত্যা সংঘটন, গণহত্যার ষড়যন্ত্র, প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে গণহত্যার জন্য উসকানি দেওয়া, গণহত্যার চেষ্টা করা বা গণহত্যার সহযোগী হতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. গণহত্যা সনদের বিধি ২-এর আলোকে গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ রক্ষা এবং তার ধ্বংস সাধনের চেষ্টা প্রতিরোধ করতে হবে।
৪. এই আদেশ জারির দিন থেকে চার মাসের মধ্যে আদালতের আদেশ অনুযায়ী মিয়ানমার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা আদালতকে জানাতে হবে। এরপর থেকে আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ছয় মাস পরপর এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে।