চির চেনা দৃশ্য নেই বঙ্গভবনেও
by কালের কণ্ঠ অনলাইনঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে স্বজন আর বন্ধুদের মিলনমেলা, হৈ-হুল্লোড়, ঘুরে বেড়ানো। ঈদ মানে কোলাকুলি, করমর্দন- পরস্পরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়।
ঈদ উপলক্ষে প্রতিবছর সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান। সরকারপ্রধান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন গণভবনে। আর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি।
বঙ্গভবনে সারি বেঁধে সবাই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিক, উচ্চ আদালতের বিচারপতি, শিক্ষাবিদ, কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। অতিথিদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি করমর্দনও করেন।
দরবার হলে হরেক পদের খাবারে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। শুভেচ্ছা বিনিময়ের ফাঁকে ঈদের শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি। এক ফাঁকে দরকার হলে গিয়ে অতিথিদের খোঁজখবর নেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় মাইকে বাজতে থাকে ঈদের গান। সাক্ষাৎপ্রার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে মূল ভবনের গোটা প্রাঙ্গন।
কিন্তু এবারই প্রথম পরিস্থিতি ভিন্ন। চলমান করোনা দুর্যোগে এবারের ঈদে চিরচেনা সেই দৃশ্য যেন হারিয়ে গেছে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবন থেকে। এবার খোলা ময়দান বা ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। একই কারণে বঙ্গভবনেও আয়োজন করা হয়নি কোনো অনুষ্ঠানের।
অন্যান্যবারের মতো এবারের ঈদেও সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেন রাষ্ট্রপতি। তবে জাতীয় ঈদগাহে নয়। খোলা ময়দানে কিংবা ঈদগাহে নামাজ আদায়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় আজ সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে ঈদের নামাজ আদায় করেন রাষ্ট্রপতি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পরিবারের সদস্য এবং 'অতিপ্রয়োজনীয়' কর্মকর্তারা।
বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার বঙ্গভবনে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক আয়োজন করা হয়নি। রাষ্ট্রপতি দরবার হলে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। সেখানে তার পরিবারের সদস্য এবং অতিপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিরা অংশ নেন।
সূত্র আরো জানায়, সকালে ঈদের নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। অন্যবারের মতো অতিথিদের উপস্থিতিতে বক্তৃতা না দিলেও সকালে সবার উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিভিশিনের (বিটিভি) মাধ্যমে। সেখানে তিনি বলেন, 'ঈদের আনন্দ করতে গিয়ে আমরা যেন এমন কিছু না করি যা নিজের ও অপরের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।'
করোনা দুর্যোগের কারণে এবার মসজিদে নামাজ আদায়ের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রেও ১৩ দফা শর্ত আরোপ করা হয়।
এসব শর্তে বলা হয়, নামাজের সময় মসজিদে গালিচা বিছানো যাবে না; নামাজের আগে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে; জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে মুসল্লিদের; সবাইকে মাস্ক পরতে হবে; মসজিদে প্রবেশের আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে; মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না; নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এসব কারণে বঙ্গভবনেও এই ব্যবস্থা নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।