দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন রোগীরা
বগুড়ার শেরপুরে পাঁচ দিন ধরে চিকিৎসাসেবা বন্ধ
by রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া)করোনা ক্রান্তিকালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বেসরকারি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পাঁচ দিন ধরে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। এসব ক্লিনিক থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগ তুলে স্থানীয় কতিপয় যুবক চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। ফলে দৈনিক শত শত রোগী চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন।
জানা গেছে, উপজেলায় বেসরকারি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১৭টি। এখানকার ক্লিনিগুলোতে শেরপুর, ধুনট, নন্দীগ্রাম, রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও কাজিপুর উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার শত শত রোগী প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। এসব ক্লিনিকে নিম্ন আয়ের মানুষেরা কম খরচে চিকিৎসাসেবা পেয়ে থাকেন। ক্লিনিকগুলোতে বিভিন্ন রোগের অপারেশন করা হয়।
এদিকে ১৮ মে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোড়ের ভি আই পি জেনারেল হসপিটালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট ও ভিশন ল্যাব অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক করোনায় আক্রান্ত হন। উপজেলা প্রশাসন ওই ২টি ক্লিনিক লকডাউন ঘোষণার পর এলাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে স্থানীয় কতিপয় যুবক ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এক পর্যায়ে ২০ মে প্রতিটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেগুলোতে তারা হানা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। এ সময় রোগী দেখতে থাকা চিকিৎসকদের (ডাক্তার) হুমকি প্রদর্শন করে ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। ফলে ওই দিন থেকে ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বলেন, করোনা ক্রান্তিকালে সরকারি নির্দেশ মেনে ক্লিনিকগুলো খোলা রাখা হয়েছে। কিন্ত স্থানীয় প্রভাবশালীদের নানাভাবে হুমকির কারণে চিকিৎসকরা ক্লিনিকে আসছেন না। তারা রোগীও দেখছেন না। ফলে এলাকাবাসী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
শেরপুর আল-রাজি ক্লিনিকের চিকিৎসক আমিরুল ইসলাম বলেন, বুধবার (২০ মে) বিকেলের দিকে ক্লিনিকে রোগী দেখার সময় স্থানীয় ৮-১০ জন যুবক হকিস্টিক ও লাঠি হাতে ক্লিনিকে এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। তারপর থেকে নিরাপত্তাহীনতার কারণে ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে পারছি না।
শেরপুর মাহবুব ক্লিনিকের চিকিৎসক আমিরুল হোসাইন চৌধুরী বলেন, স্থানীয় কতিপয় যুবকদের হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতার মাঝে দিনযাপন করছি। তাদের ভয়ে ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, এ বিষয়ে ক্লিনিকের মালিক পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করেনি। তারপরও ক্লিনিকের মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দর সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। বর্তমানে সবগুলো ক্লিনিক খোলা রয়েছে। তবে কোন কোন ক্লিনিকে ডাক্তারা চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না।