‘পরশ পাথর’ হারাল ভারত
by খেলা ডেস্করইলেন শুধু কেশব দত্ত।
১৯৪৮ লন্ডন অলিম্পিক হকির ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৪-০ গোলে হারিয়ে সোনা জেতে ভারত। সে ম্যাচে গোল করা তারলোচন সিং ২০০৮ সালে মারা যাওয়ার পর কথাটা বলেছিলেন বলবীর সিং সিনিয়র, 'এক এক করে ১৯৪৮ অলিম্পিক দলের সবাই চলে যাবে। তখন ওখানে আমরা দল বানাতে পারব। খুব দ্রুত আমার ডাকও আসবে। সবচেয়ে বিশ্বাসী ফরোয়ার্ড ছাড়া দল চলতে পারবে না।'
অবশেষে আজ ডাক পেলেন বলবীর। বাধ্যর্কজনিত সমস্যায় ভুগতে ভুগতে ৯৫ বছর বয়সে অলিম্পিকে তিনবার সোনাজয়ী হকি কিংবদন্তি। তবু বলবীরের সেই দলটা এখনই পুরো হচ্ছে না। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ বয়সী জীবিত অলিম্পিক পদকজয়ীর রেকর্ডটি কেশব দত্তের কাছে হস্তান্তর করে চলে গেলেন বলবীর।
১৯৪৮, ১৯৫২ ও ১৯৫৬ অলিম্পিক হকিতে ভারতের সোনাজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন বলবীর। এর মধ্যে লন্ডনে (১৯৪৮) স্বাধীন ভারতকে প্রথম অলিম্পিক সোনা এনে দিয়েছিল বলবীরদের দল। ১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিকে তাঁর নেতৃত্বে সোনা জেতে ভারত। বলবীরকে বলা হতো 'আধুনিক ধ্যাঁন চাঁদ।' গোল করার অবিশ্বাস্য ক্ষমতার জন্য অনেকের চোখেই বলবীর হকির সর্বকালের সেরা সেন্টার ফরোয়ার্ড। অলিম্পিক হকি ফাইনালে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড এখনো তাঁর দখলে।
জাতীয় হকি দলের সঙ্গে বলবীর থাকা মানেই পদক জিতেছে ভারত। খেলোয়াড় হিসেবে তো জিতেছেনই, হকিতে ভারতের বিশ্বকাপজয়ী (১৯৭৫) দলের ম্যানেজারও ছিলেন তিনি। তার আগে কোচ হিসেবে ১৯৭১ বিশ্বকাপে ভারতকে জিতিয়েছেন ব্রোঞ্জ। ভারত হকি দলের জন্য যেন 'পরশ পাথর' ছিলেন বলবীর। ক্রীড়াঙ্গনে আরও বলবীর থাকায় 'সিনিয়র' নামে পরিচিত ছিলেন এ কিংবদন্তি। অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ভারতের হয়ে ৬১ ম্যাচে করেছিলেন ২৪৬ গোল।
অলিম্পিকে ভারতের হয়ে সোনাজয়ী শুটার অভিনব বিন্দ্রা শোক প্রকাশ করেছেন বলবীরের চলে যাওয়ায়, 'ভারতের অন্যতম আলোচিত অলিম্পিয়ান বলবীর সিং সিনিয়র চলে যাওয়ায় খারাপ লাগছে। তার মতো রোল মডেল খুব কম আসে।'