![https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/05/25/d5bf3a5d0bc32512594accb389ce9f50-5ecb96ec70f91.jpg https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/05/25/d5bf3a5d0bc32512594accb389ce9f50-5ecb96ec70f91.jpg](https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/05/25/d5bf3a5d0bc32512594accb389ce9f50-5ecb96ec70f91.jpg)
কার্টুনিস্ট কিশোরসহ চারজনের সঙ্গে দেখা করতেই পারছেন না পরিবার
by শেখ সাবিহা আলম, ঢাকাকার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার চার ব্যক্তির সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে পারেননি স্বজনরা। এমনকি ঈদের দিনেও তাঁরা দেখা করার সুযোগ পেলেন না।
রোববার কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, ব্যবসায়ী ও লেখক মুস্তাক আহমেদ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানের স্বজন ও ঘনিষ্ঠসূত্রগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক মঞ্জুর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় এপ্রিল থেকে কারাবন্দীদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ আছে। ঈদের দিনও সাক্ষাতের সুযোগ থাকছে না।
এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা আরও জানান, কারাবন্দীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে প্রায় তিন হাজারজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সবশেষ আজ মুক্তি পেয়েছেন ১৭ জন।
তবে স্বজনরা নিশ্চিত করেছেন সবশেষ এই ১৭ জনের তালিকাতেও গত ৫ মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, ব্যবসায়ী ও লেখক মুস্তাক আহমেদ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভ'ঁইয়া ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান নেই। এর আগে দুই দফায় গ্রেপ্তারকৃতদের জামিন আবেদন নাকচ হয়।
লেখক ও ব্যবসায়ী মুস্তাক আহমেদের স্ত্রী লিপা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, 'আমরা আশা করেছিলাম করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি, ঈদ সবকিছু বিবেচনায় হয়তো জামিন হয়ে যাবে, হলো না।'
লিপাই গত ৪ মে দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান, র্যাব-৩ এর পরিচয় দিয়ে তাঁর বাসায় লোক ঢুকতে চাইছে। একঘন্টা পর আরেকটি পোস্টে জানান, তাঁর স্বামীকে র্যাব ধরে নিয়ে গেছে, সঙ্গে সিপিইউটিও নিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ মে র্যাব-৩ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো আবু বকর সিদ্দিক রমনা থানায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, মোস্তাক আহম্মেদ, দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
গ্রেপ্তারকৃত কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও মুস্তাক আহম্মেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আই এম বাংলাদেশি (ইংরেজি হরফে লেখা) নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে 'রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারী করোনা, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির' অভিযোগ আনা হয়। এজাহারে র্যাব দাবি করে মুস্তাক আহম্মেদকে জিজ্ঞাসাবাদে দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নানের সম্পৃক্ততা পায় তারা।
আই এম বাংলাদেশি পেজটি চালানোর দায়ে যে ছয়জনকে আসামি করা হয় তাঁরা হলেন, সায়ের জুলকারনাইন, আহমেদ কবির কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ ও মুস্তাক আহমেদ। হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত কথোপকথনের জেরে আসামি হন প্রবাসী সাংবাদিক তাসনীম খলিল ও সাহেদ আলম, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন, দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নানকে।
জামিনের বিরোধিতা যে কারণে:
গত ৬ ও ৭ মে দুই দফায় গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে যে তিনটি যুক্তি উপস্থাপন করেন তা হলো, আসামিদেন 'স্বভাবচরিত্র' মোটেই ভাল নয়। তাঁরা জামিন পেলেই 'চিরতরে' পালিয়ে যাবেন এবং মামলার তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে।
আইনজীবী মাইনুল আলম গত ১৪ মে মিনহাজ মান্নান ও ১৭ মে আহমেদ কবির কিশোর ও মুস্তাক আহম্মেদের জামিন আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর হয়নি।
মাইনুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ তাঁর মক্কেলদের সাতদিনের রিমান্ডে চেয়েছিল। রিমান্ড আবেদনের শুনানি আদালত করেননি, সে কারণে আদালত জামিন আবেদনের শুনানিও করেননি।
ঠিক কি যুক্তি আদালতে দেখিয়েছেন জানতে চাইলে মাইনুল আলম বলেন, 'অভিযোগ গুজব ছড়ানোর। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষ তাঁরা কি গুজব ছড়িয়েছেন সেটারই কোনো নজির আদালতে হাজির করেনি।'
জানা গেছে, অভিযোগের নজির হিসেবে র্যাব ষাটপাতা স্ক্রিনশট থানায় দিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জামশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে তাঁরা ওই স্ক্রিনশট জমা দেবেন।
এামলার অগ্রগতি কতটা জানতে চাইলে জামশেদ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার তদন্ত একটু জটিল ও সময়সাপেক্ষ।
গত ৬ ও ৭ মে দুই দফায় গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে যে তিনটি যুক্তি উপস্থাপন করেন তা হলো, আসামিদেন 'স্বভাবচরিত্র' মোটেই ভাল নয়। তাঁরা জামিন পেলেই 'চিরতরে' পালিয়ে যাবেন এবং মামলার তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে।
আইনজীবী মাইনুল আলম গত ১৪ মে মিনহাজ মান্নান ও ১৭ মে আহমেদ কবির কিশোর ও মুস্তাক আহম্মেদের জামিন আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর হয়নি।
মাইনুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ তাঁর মক্কেলদের সাতদিনের রিমান্ডে চেয়েছিল। রিমান্ড আবেদনের শুনানি আদালত করেননি, সে কারণে আদালত জামিন আবেদনের শুনানিও করেননি।
ঠিক কি যুক্তি আদালতে দেখিয়েছেন জানতে চাইলে মাইনুল আলম বলেন, 'অভিযোগ গুজব ছড়ানোর। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষ তাঁরা কি গুজব ছড়িয়েছেন সেটারই কোনো নজির আদালতে হাজির করেনি।'
জানা গেছে, অভিযোগের নজির হিসেবে র্যাব ষাটপাতা স্ক্রিনশট থানায় দিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জামশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে তাঁরা ওই স্ক্রিনশট জমা দেবেন।
এ মামলার অগ্রগতি কতটা জানতে চাইলে জামশেদ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার তদন্ত একটু জটিল ও সময়সাপেক্ষ।
পরিবারের উদ্বেগ
গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে উদ্বেগে আছে পরিবারগুলো। কাটুর্নিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের বড় ভাই আহসান কবির প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তাঁর ছোটভাই কে নিয়ে চিন্তায় আছেন।
রোববার আহসান কবির প্রথম আলোকে বলেন, 'কিশোরের ডায়াবেটিস আছে। ইনসুলিন নিয়েও প্রায়ই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বছর দুয়েক আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হাত ভেঙে যায়, ডায়াবেটিসের কারণে জোড়া লাগেনি।'
দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্ত্রী দিলশাদ ভূঁইয়া জানান, তাঁর স্বামীকে উচ্চ রক্তচাপের জন্য নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। তিনি স্বামীকে ওষুধ পৌঁছাতে পারেননি। এমনকি যে পোশাকে তাঁকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, এখনও তিনি সে পোশাকেই আছেন। পোশাকও পৌঁছাতে পারেননি।
দিলশাদ ভূঁইয়া (অপর্ণা) রোববার প্রথম আলোকে বলেন, 'আমার ছোট ছোট তিন সন্তান, আমার বৃদ্ধ অসুস্থ শ্বশুর সবাইকে আমি মিথ্যে আশ্বাস দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ঈদের আগে দিদারকে বের করে আনতে পারব। পারলাম না।”