করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায়
by নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাকরোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আজ সোমবার মসজিদে মসজিদে হাজারো মুসল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।এ ব্যাপারে আগেই সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হয়।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে আজ সকাল সাতটায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররমের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান তাতে ইমামতি করেন।
মুসল্লিরা মুখে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় করেন। মসজিদের ভেতর জায়গা না হওয়ায় অনেকে মসজিদের বাইরে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে সবাই কোলাকুলি করা থেকে বিরত ছিলেন।
ঈদের নামাজ শেষে করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া চাওয়া হয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঈদগাহে কিংবা খোলা জায়গায় এবার ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আজ দেশের মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদে মসজিদে এবার ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মসজিদে নামাজ আদায় করার পর ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, 'ঈদের নামাজ কোনো দিন মসজিদে আদায় করিনি। ছোটবেলা থেকে ঈদের নামাজ ঈদগাহ ময়দানে গিয়ে আদায় করি। সেখানে সবার সঙ্গে দেখা হয়। নামাজ আদায় শেষে কোলাকুলি করতাম। কিন্তু করোনার কারণে এবার এলাকার মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেছি। মুখে মাস্ক পরে শারীরিক দূরত্ব মেনে নামাজ আদায় করা হয়েছে।'
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, করোনার সংক্রমণ এড়াতে সরকারি নির্দেশনায় এবার খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। মসজিদে নামাজ আদায় করতে হলে প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মুখে মাস্ক পরিধান করতে হবে। নামাজ আদায় করার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি এবং বৃদ্ধরা ঈদের নামাজে অংশ নিতে পারবেন না।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য অনুরোধ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে ১৪ মে ধর্ম মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনা জারি করে। সেখানে বলা হয়, 'চলতি বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত কাছের মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হলো।'
স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে নামাজ আদায় করার ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ, ঈদের নামাজ আদায়ের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের আগে জীবাণুনাশক রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি বলছে, করোনার সংক্রমণ রোধে অজু করার স্থানে সাবান অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদের প্রবেশপথে সাবান অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। যাঁরা মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসবেন, তাঁরা যেন বাসা থেকে অজু করে আসেন। অজু করার সময় ২০ সেকেন্ড সময় ধরে হাত ধুতে হবে। মসজিদে নামাজ আদায় করতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে।
ঈদের নামাজ আদায় করার পর কোলাকুলি কিংবা হাত মেলানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সবার সুবিধার্থে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনা মেনে চলতে মুসল্লিদের অনুরোধ করা হয়েছে।
সর্বোপরি করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার জন্য মসজিদের খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ২৮ জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৪৮০