এত গরম আগে দেখেনি অ্যান্টার্কটিকা
by অনলাইন ডেস্কবরফের মহাদেশ হিসেবে পরিচিত অ্যান্টার্কটিকা। পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশটির প্রায় ৯৮ শতাংশই ঢেকে আছে বরফে। বরফঢাকা সেই অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের উপদ্বীপ অঞ্চলে এবার তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড দেখেছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অ্যান্টার্কটিকার তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ ফেব্রুয়ারি অ্যান্টার্কটিকার সেমুর দ্বীপে প্রথমবারের মতো ২০ দশমিক ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছেন গবেষকেরা। অ্যান্টার্কটিকার এ এলাকাটি দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত। ঘটনাটির অস্বাভাবিকতা বোঝাতে গিয়ে ব্রাজিলীয় বিজ্ঞানী কার্লোস শেফার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘অ্যান্টার্কটিকায় এত উচ্চ তাপমাত্রা এর আগে কখনো দেখিনি।’
এই উচ্চ তাপমাত্রা অবশ্য কোনো দীর্ঘ গবেষণার ফসল নয়, বরং দিনের একটি সময়ে কিছুক্ষণের জন্য এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ক্ষণিকের এই তাপমাত্রাই যে ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত, সেটি মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি শেফার, ‘অল্প সময়ের এই তাপমাত্রা থেকে কোনো পূর্বানুমান করে নেওয়া উচিত নয়। তবে এই ঘটনা আমাদের ইঙ্গিত দেয়, অ্যান্টার্কটিকায় যা হচ্ছে, তা মোটেও স্বাভাবিক ঘটনা নয়।’
এর আগে অ্যান্টার্কটিকায় সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল প্রায় চার দশক আগে। ১৯৮২ সালের জানুয়ারি মাসে অ্যান্টার্কটিকায় ১৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
রেকর্ড এই তাপমাত্রা মাপার মাত্র সপ্তাহখানেক আগেই আরেকবার উচ্চ তাপমাত্রা দেখেছিল অ্যান্টার্কটিকা। ৬ ফেব্রুয়ারি মহাদেশটিতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৫ সালের মার্চে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় সাড়ে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মুখপাত্র ক্লেয়ার নুলিস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অ্যান্টার্কটিকায় এ রকম তাপমাত্রা সাধারণত দেখা যায় না, এমনকি গ্রীষ্মকালেও না।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব পুরো বিশ্বের মতো অ্যান্টার্কটিকাতেও পড়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত ৫০ বছরে অ্যান্টার্কটিকার গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মহাদেশটির পশ্চিমাংশের প্রায় ৮৭ শতাংশ হিমবাহও এ সময়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বিশেষ করে গত এক যুগে হিমবাহ গলে যাওয়ার হার ছিল সবচেয়ে বেশি। অ্যান্টার্কটিকার ইতিহাসের উষ্ণতম মাস ছিল গত জানুয়ারি মাস।