ভালোবাসা আর বসন্ত দোল খেলো একমঞ্চে

by
https://cdn.banglatribune.com/contents/cache/images/1100x0x1/uploads/media/2020/02/14/afb3b10d286119ca70435dd63bd91c66-5e46c5625d42f.jpg
গান পরিবেশন করছেন আমিনা আহমেদ (সামনে, ডান থেকে দ্বিতীয়)

‘আমি তো ঘণ্টার পর ঘণ্টা গান শোনাতে চাই। এরচেয়ে তৃপ্তির কিছু নেই তো। কিন্তু সেটা তো আর সব সময় সম্ভব হয় না।’ কথাগুলো একরকম দীর্ঘশ্বাস নিয়েই বললেন দেশের অন্যতম রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ।
আনন্দঘন অনুষ্ঠানের শেষটা হলো এভাবেই, পিনপতন নীরবতায়। অথচ এই মঞ্চেই সাদি মহম্মদের নেতৃত্বে টানা দেড় ঘণ্টা ভালোবাসা আর বসন্তের গানগুলো দোল খেলো সুরের দোলনায়। তার সঙ্গে ছিলেন দেশের আরেক স্বনামধন্য শিল্পী আমিনা আহমেদসহ সংগীত সংগঠন রবিরাগ-এর ১৯ সদস্যের একটি দল। যাদের সমবেত কণ্ঠ-বাদনে আর লাল-হলুদ পোশাকে বর্ণিল হয়েছিল কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন।
বসন্ত আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় (১৪ ফেব্রুয়ারি) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি সাজানো হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসন্ত আর প্রেমের গান দিয়ে।
শুরুটা হয় যৌথ কণ্ঠে ‘ওরে গৃহবাসী দ্বার খোল দ্বার খোল’ গানটির মধ্য দিয়ে। এরপর একক ও যৌথ কণ্ঠে একে একে রবিরাগের সদস্যরা গেয়ে শোনান- ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়’, ‘আমার মনের কোনের বাইরে’, ‘বনে যদি ফুটলো কুসুম’, ‘ঐ দিগন্তে ফুলের আগুন লাগলো’, ‘কী কথা আজ লিখেছে’, ‘আমারও পরাণও যাহা চায়’, ‘আমার দোসর যে জন’, ‘এসো এসো আমার ঘরে এসো’, ‘দোলে প্রেমের দোলনচাঁপা’, ‘মায়া বনো বিহারিণী’, ‘বল গোলাপ মোরে বল’, ‘মোর বীণা উঠে কোন সুরে বাজি’, ‘ভালোবেসে সখি’, ‘তুমি সন্ধ্যারও মেঘমালা’, ‘আমার হিয়ার মাঝে’ প্রভৃতি।
বসন্ত আর ভালোবাসার গানের ফাঁকে দর্শক অনুরোধে তালিকার বাইরে গিয়ে সাদি মহম্মদ গেয়ে শোনান ‘সখি ভালোবাসা কারে কয়’ শিরোনামে বিরহের গানটিও! দর্শকসারি থেকে এমন অনুরোধ আরও থাকলেও এই শিল্পী বিনয়ের সঙ্গে এড়িয়ে যান। সময় ফুরিয়ে গেল বলে গেয়ে শোনান সমবেত কণ্ঠে শেষ দুটি গান। যার একটি ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও’, অন্যটি ‘যা ছিলো কালো ধলো’।

https://cdn.banglatribune.com/contents/cache/images/1100x0x1/uploads/media/2020/02/14/96a0f86d3b9663417ea3f7f2b6a7f42e-5e46c562e66f9.jpg
রবিরাগ সদস্যদের নিয়ে মঞ্চে সাদি মহম্মদ (মাঝে)

মূলত এই দুটি গানের পরই বিদায় ভাষণে সাদি মহম্মদের কণ্ঠে সেই আক্ষেপের সুর। বললেন, ‘পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া গাইবো কী করে? আমি তো গাইতেই চাই। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া তো এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব নয়। আমাদের এই অনুষ্ঠানের পাশে যদি মীনা বাজার আর মীনা ট্রাস্ট এগিয়ে না আসতো, তাহলে তো এত সুন্দর একটি আয়োজন হতো না। আমরা গান শোনাতে পারতাম না। আমার পাশেই বসে আছেন আমাদের রবিরাগের সভাপতি আমিনা আপা। তার সহযোগিতাতেই আমরা এই পৃষ্ঠপোষকতা পেলাম। এর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
উপস্থিত সবাইকে বসন্তের রঙিন শুভেচ্ছা জানিয়ে সাদি বললেন, ‘মানুষকে ভালোবাসবেন।’
ছবি: নাসিরুল ইসলাম