সবখানেই অনিয়ম আর দুর্নীতি ॥ রিজভী

http://www.dailyjanakantha.com/files/202002/1581694972_09.jpg

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্র ও সমাজের সবখানেই এখন চলছে অনিয়ম আর দুর্নীতি।রেললাইন নির্মাণ থেকে শুরু করে ভবন নির্মাণ-যেখানে রডের পরিবর্তে বাঁশের ব্যবহার নিয়ে তথ্য প্রমাণসহ পত্র পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু সরকারের টনক নড়েনি।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় রিপোর্ট দেখলাম, সিলেটে সুরমা নদীর ওপর হযরত শাহজালাল তৃতীয় সেতুর প্যানের এক্সপানশন জয়েন্টে লোহার পাতের বদলে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। কেন এমন হচ্ছে? কারণ এখানে সেতু নির্মাণ মুখ্য নয়।

‘এখানে সেতু নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করাই হচ্ছে মুখ্য উদ্দেশ্য। গত একদশকে দেশের মানুষ দেখেছে যে কীভাবে এই সরকারের শাসনামলে দুর্নীতির উন্নয়ন আর উন্নয়নের নামে দুর্নীতি চলছে।’

তিনি বলেন, অপ্রিয় হলেও সত্য, দুর্নীতি-লুটপাট-টাকা পাচার-ব্যাংক ডাকাতি, অনাচার-অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নৈতিক কিংবা সৎ সাহস কোনোটি-ই এ সরকারের নেই। কারণ যেভাবে রডের বদলে বাঁশ দিয়ে এই সরকার সেতু কিংবা ভবন নির্মাণ করছে ঠিক তেমনি এই সরকারটিও বারবার জন্ম নিচ্ছে প্রশাসনের সহায়তায় রাতের অন্ধকারে জনগণের ভোট ছাড়া। যে সরকারের জন্মই অবৈধ ও অনৈতিক তাদের দ্বারা সুশাসন সম্ভব নয়। তাদের দ্বারা উন্নত ও মানবিক সমাজ সম্ভব নয়।

রিজভী বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা মেরে বিভিন্ন সময় বিদেশে পালিয়ে গেছেন এমন শতাধিক লুটেরাকে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণের টাকা তুলতে না পেরে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো এসব ঋণকে মন্দ ঋণ (খেলাপি) ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছে। এমনকি এদের কারণে একটি অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অবসায়ন করা হয়েছে। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়েছেন।

‘বিদেশে করেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান আছে কানাডাতেও। কয়েকশ কোটি টাকা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন। এমন আরও অনেকে ব্যাংকের টাকা মেরে ব্যাংকক, দুবাই, অস্ট্রোলিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে।’

বিএনপির মুখপাত্র রিজভী বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন-পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই-বৈশাখ গেল, জ্যৈষ্ঠ গেল, দেখতে দেখতে পৌষ-মাঘ সবই গেল, কিন্তু পেঁয়াজের দাম কমলো না। এখন শীতকাল, পেঁয়াজসহ শাকসবজির সময়, অথচ শুধু পেঁয়াজই নয়, সব শাকসবজির দামই লাগামহীন ঘোড়ার মতো মানুষের নাগাল থেকে ছুটে চলছে।

তিনি বলেণ, শাকসবজি ছাড়াও নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে। অথচ মধ্যরাতের সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী নিঃসঙ্কোচে বললেন, পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য-বিবৃতিতে মানুষ এখন অতিষ্ঠ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।