যুবরাজ-নেতানিয়াহু’র সম্ভাব্য বৈঠকের কথা অস্বীকার সৌদি আরবের

by

সৌদি আরবের প্রভাবশালী যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য বৈঠক আয়োজনের কথা অস্বীকার করেছে সৌদি আরব। বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের মালিকানাধীন আল-আরাবিয়াকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের বৈঠকের কোনও পরিকল্পনা করা হয়নি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।

https://cdn.banglatribune.com/contents/cache/images/600x0x1/uploads/media/2020/02/14/f90cf2b28f8eb20d3a5266ec9d637ea6-5e46af5151a5d.jpg

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী  বলেন, সংঘাতের শুরু থেকেই সৌদি আরবের অবস্থান স্পষ্ট। সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা ফিলিস্তিনিদের পাশে আছি।

প্রিন্স ফয়সাল বলেন, সৌদি আরব সব সময় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। কিন্তু ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ন্যায্য বসতি নিয়ে সম্মতি থাকতে হবে। এছাড়া সৌদি আরবের নীতি অটল থাকবে।

সম্প্রতি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়, মিসরে কয়েকটি আরব দেশের সম্মেলনে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে নেতানিয়াহুর বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এক আরব কূটনীতিক দাবি করেছিলেন এই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, মিসর ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা হচ্ছে।

সিনিয়র আরব কূটনীতিক আরও বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটন, ইসরায়েল, মিসর ও সৌদি আরবের মধ্যে কায়রোতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজনের জন্য জোরদার কূটনৈতিক আলোচনা চলছে। এই বৈঠক ইসরায়েলের নির্বাচনের আগেও হতে পারে। এতে উপস্থিত থাকতে পারেন ইসরায়েল, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুদান, ওমান ও বাহরাইনের নেতারা।

এর আগে খবরে জানা গিয়েছিল এই বৈঠক বাহরাইনের রাজধানী মানামাতে আয়োজন করা হতে পারে। কারণ এখানেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শতাব্দির সেরা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। মূলত নেতানিয়াহু ও সৌদি যুবরাজকে একসঙ্গে বৈঠকে বসানোর জন্যই এই আয়োজন।

এই বিষয়ে জানা গেছে যে, জর্ডানকে প্রস্তাবিত বৈঠকের আমন্ত্রণও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেশটির বাদশাহ আব্দুল্লাহকে আরব দেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয় যাতে করে ফিলিস্তিনকেও বৈঠকের আমন্ত্রণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে এবং জানায় এই বিষয়ে ফিলিস্তিনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ইসরায়েলও ফিলিস্তিনিদের অংশগ্রহণের বিষয়ে সম্মতি জানায়।

তবে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাষ্ট্রকে কূটনৈতিকভাবে বয়কট ও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রাখার বিষয়ে অটল থাকেন।

আরব কর্মকর্তা বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টকে যুক্তরাষ্ট্র বলে, এটি হবে আব্বাস ও ফিলিস্তিনিদের জন্য অঞ্চলটির কূটনৈতিক অগ্রগতিতে অংশগ্রহণের শেষ সুযোগ।  

গত কয়েক বছর ধরে সৌদি আরব ও উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে ক্রমশ সম্পর্ক বাড়িয়ে চলেছে। এতে করে ধারণা করা হচ্ছে ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে মুসলিম আরব দেশগুলোর। আর ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ডের লড়াই ক্রমশ গুরুত্ব হারাচ্ছে তাদের কাছে।

গত বছর জুলাই মাসে ইসরায়েল ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ওয়াশিংটনে প্রকাশ্যে বৈঠক করেন। এটিই ছিল কোনও আরব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রথম প্রকাশ্য বৈঠক। এছাড়া সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের দুই দশক ধরে চলমান গোপন সম্পর্কের কথা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।

গত মাসেই যখন ট্রাম্পের শতাব্দির সেরা চুক্তি বা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা উন্মোচন করা হয় তখন সৌদি আরব ইসরায়েলের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র কেনার ইচ্ছার কথা জানায়।