কিশোরগঞ্জে দুই দিন ধরে বাস ধর্মঘট, যাত্রীদের দুর্ভোগ
by প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জআকলিমা আক্তারের স্বামী থাকেন ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায়। স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার জন্য শুক্রবার ছোট ছোট সন্তান নিয়ে ইটনা থেকে কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল বাসস্ট্যান্ডে আসেন। এত দূর থেকে সন্তানদের নিয়ে এসে দেখেন, সব বাস বন্ধ।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আকলিমার মতো শত শত যাত্রী এ রকম ভোগান্তিতে পড়ছেন। গতকাল থেকে কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকাগামী যাতায়াত প্রাইভেট লি., যাতায়াত পরিবহন ও অনন্যা সুপারের প্রায় দেড় শ বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন মালিক-শ্রমিকেরা।
হঠাৎ বাস বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে যাতায়াত পরিবহন বাসের মালিক জুনায়েদ পিন্টু বলেন, কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরব যাওয়ার পথে পুলেরঘাট এলাকায় তিন দিন আগে কিছু দুষ্কৃতকারী বাস ভাঙচুর এবং চালক-শ্রমিকদের মারধর করে। এ নিয়ে তাঁরা প্রশাসনসহ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এ ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
কিশোরগঞ্জ জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ করে বলেন, পাকুন্দিয়ার পুলেরঘাট এলাকায় বারবার শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার–নির্যাতন করা হচ্ছে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগও করা হয়েছে। এরপরও কোনো কাজ হচ্ছে না। বৃহস্পতিবারও সদর থানার পরিদর্শক মিজানুর রহমান বাসস্ট্যান্ডে এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই জনদুর্ভোগ হলেও শ্রমিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে এ ধর্মঘট চলবে।
কিশোরগঞ্জ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বায়ক লেলিন রায়হান বলেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হোক সেটা তাঁরা চান না। আশা করা হচ্ছে, প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঢাকায় একটি প্রশিক্ষণে আছেন। সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি করে দুদিন ধরে বাস বন্ধ রাখায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় ২০ দিন আগে এ বিষয়টি তাঁকে জানানো হলেও দুই দিন ধরে বাস ধর্মঘটের বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তিনি খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
কিশোরগঞ্জ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।