https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/02/14/9090185aa6a0ca6bc06ea5e27da2babd-5e468e774d8b2.jpg
কোম্পানীগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন

এবার সভাপতিকে অব্যাহতি

by

কোম্পানীগঞ্জ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ইউএসএর কোন্দল নতুন রূপ নিয়েছে। একের পর এক আসছে পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্ত ও ঘোষণা। সর্বশেষ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকসহ একটি পক্ষ সভাপতি আবদুল মালেককে অব্যাহতি দিয়েছে। তবে সংগঠনের নির্বাচন নিয়েও এখনো শঙ্কা কাটেনি। কবে নির্বাচন হবে, তাও জানে না কেউ।
প্রায় ছয় মাস ধরে কোম্পানীগঞ্জ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রমে অচলাবস্থা চলছে। নির্বাচন নিয়ে সংগঠনের নেতৃত্বের পাশাপাশি সাধারণ সদস্যরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
সংগঠনের সদস্যদের সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি দ্বিতীয় বাড়ি কেনাসহ নানা বিষয়ে আবদুল মালেক ও মোশারফ হোসেনের (সবুজ) নেতৃত্বে দুপক্ষে বিরোধ দেখা দেয়। সভাপতির পক্ষে কার্যকরী কমিটির আটজন আর সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে সাতজন অবস্থান নেয়। এতে বিভক্তি দেখা দেয় সমিতির সাধারণ সদস্যদের মধ্যেও। সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে বেশি দামে দ্বিতীয় বাড়ি কেনার অভিযোগ ওঠে।
গত বছরের অক্টোবরে কমিটির নির্বাচন আয়োজনকে ঘিরে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বাইরে বসবাসরত কোম্পানীগঞ্জের প্রবাসী ভোটারদের কাছে মেইলে ব্যালট পেপার পাঠানোর ইস্যুকে ঘিরে ট্রাস্টি বোর্ড, নির্বাচন কমিশন এবং কার্যকরী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ বিপরীতমুখী অবস্থান নেয়। সদস্যদের মধ্যেও বিভক্তি দেখা দেয়। এর মধ্যে সমঝোতার নানা উদ্যোগের ফলে গত ডিসেম্বরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা মিলেমিশে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
কার্যকরী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন সপ্তাহ আগে ৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। ওই দিন সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নির্বাচন পরিচালনার জন্য অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হবে। তাদের কাছে দায়িত্ব ছাড়বে কার্যকরী কমিটি। পরদিন ৮ ডিসেম্বর বিশেষ সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন পায়। কিন্তু তাদের মধ্যে সমঝোতার পর শুরু হয় নতুন জটিলতা। এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থা নেয় কার্যকরী কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক পক্ষ। সভা করে তারা অ্যাডহক কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এরই মধ্যে বাতিল করা হয় নির্বাচন কমিশন। এরপর বিশেষ সাধারণ সভা করে বাতিল করা হয় ট্রাস্টি বোর্ড। এর সঙ্গে কমিটির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর বাড়ানো হয়। 

২০২০ সালের শুরু থেকেই সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক ঐক্যবদ্ধভাবে নানা উদ্যোগ নেন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন তাঁরা। অন্যদিকে, ট্রাস্টি বোর্ড বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংগঠনের প্রবীণ–নবীন সদস্যদের একটা অংশ অবস্থা নেয়। তারা ২ ফেব্রুয়ারি সভা করে মালেক–মোশারফের কমিটিকে অবৈধ দাবি করে। এরই মধ্যে ৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর ও কার্যকরী কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেন কার্যকরী কমিটির সভাপতি আবদুল মালেক। একই দিন, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কালাম সাধারণ সম্পাদক মোশারফকে চিঠি দিয়ে সাত দিনের মধ্যে সংগঠনের সব কাগজপত্র বুঝিয়ে দিতে বলেন। ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কার্যনির্বাহী কমিটির নয়জন সভা করেন। সভায় সভাপতি পদ থেকে আবদুল মালেককে অব্যাহতি দিয়ে সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল আলিমকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সংগঠনের সদস্যরা বলছেন, এভাবে একেক পক্ষের একেক সিদ্ধান্তে সাধারণ সদস্যদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়ছে। নিষ্পত্তির নানা উদ্যোগের মধ্যে এখন এতে সরাসরি যোগ হয়েছে ট্রাস্টি বোর্ড। সংগঠনের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রবীণ সদস্যদের অনেকে উদ্বিগ্ন। একই শঙ্কা নবীন সদস্যদের মধ্যে। এ শঙ্কা দূর করতে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার বিকল্প নেই বলে মনে করে তাঁরা।