শীতের মৌসুমেও জেলের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

by
https://cdn.banglatribune.com/contents/cache/images/800x0x1/uploads/media/2018/09/24/d21961802fe3e7a10ddbca603f18189e-5ba8e94ce4582.jpg
ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে

দেশের নদী অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার নদীগুলোতে এখন চলছে ইলিশ ধরার ধুম। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের দল আটকা পড়ছে জেলেদের জালে। তবে ধরা পড়া এসব ইলিশ আকারে ছোট। তাতেও অখুশি নন জেলেরা। সাধারণত শীতের এই মৌসুমে অলস সময় কাটাতেন জেলেরা। নদীতে তেমন ইলিশ ধরা পড়তো না। তবে চলতি বছর এই মৌসুমে ইলিশ ধরা পড়ায় বেজায় খুশি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলেরা। এর প্রভাবে দাম কমেছে ইলিশের। এতে খুশি ক্রেতারাও। বরগুনা, পিরোজপুর ও ভোলার একাধিক জেলের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ অববাহিকার নদনদীতে বিশেষ করে মেঘনা ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরা পড়ছে গত কয়েকদিন আগে থেকে। এ কারণে রাজধানীসহ সারাদেশে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। কমেছে দামও।

জেলেরা জানিয়েছেন, সাধারণত এ সময় বাজারে শীতকালীন মাছের চাহিদা বেশি থাকে, ইলিশের চাহিদা কম থাকে। তারপরও এবছর ইলিশের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম অনেকটাই কমে গেছে। ইলিশের  দামের প্রভাব পড়েছে অন্য প্রজাতির মাছেও। এর সুফল পাচ্ছেন ক্রেতারা।

পিরোজপুর পারেরহাটের জেলে মোকাররম হোসেন বলেন, শীতের সময়ে সাধারণত আমরা নদীতে ইলিশের জাল ফেলি না।। কারণ এই মৌসুমে ইলিশ ধরা পড়ে না। এ বছর ব্যতিক্রম। এই শীতের মৌসুমে ইলিশের ঝাঁক জালে আটকা পড়ছে। তবে আকারে ছোট। একেকটি ইলিশের ওজন পাঁচশ গ্রাম থেকে এক কেজি। সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কিছুটা কম বলে জানান মোকাররম হোসেন।

বরগুনার পাথরঘাটার ইলিশ জেলে ইব্রাহিম খান জানিয়েছেন, এই সময় আমরা অনেকটাই অলস সময় কাটাই। তবে এবার ইলিশ মাছ বেশি ধরা পড়ছে বলে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। এ কারণে এলাকার ইলিশের মোকামগুলোও এখন জমজমাট।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ইলিশের সবচেয়ে বড় মোকাম বরিশালের পোর্ট রোডের নারায়ন মৎস্য ভাণ্ডারের মালিক শ্রী কালাচান দাস জানান, গত কয়েক দিন বঙ্গোপসাগর ও মেঘনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। বেশিরভাগ ইলিশের ওজন এক কেজির নীচে। সাধারণত এই মৌসুমে এতো ইলিশ ধরা পড়ার নজির নেই। তিনি জানিয়েছেন, ইলিশের সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কম এতে ক্রেতারা খুবই খুশি।

জানা গেছে, পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুরের বেসরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রেও ইলিশ সরবারহ বেড়েছে। বর্তমানে সেখানে জেলেদের নৌকা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ মন ইলিশ আসছে।

এদিকে রাজধানীর কাওরানবাজার, যাত্রাবাড়ি বাজার, ও কোনাপাড়া বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীতকালীন অন্য মাছের ভিড়েও ইলিশের দাপট ব্যাপক। শীতকালীন শোল, বোয়াল, কৈ মাছের পাশাপাশি ইলিশের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশ। দামের ক্ষেত্রে কিছুটা নমনীয় বলে ক্রেতাদের ইলিশের প্রতি নজর বেশি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু জানিয়েছেন, এ বছর ইলিশের উৎপাদন অতীতের যে কোনও সময়ের তুলনায় বেশি। এ কারণেই এই সিজনেও ইলিশ ধরা পড়ছে। এই সুযোগে যাতে কেউ জাটকা শিকার না করে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনসহ নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে পাহারায় রাখা হয়েছে।