https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2020/01/31/a7abd14aecd5c5c8ff600b0235a725cd-5e34230be4221.jpg
মেডিকেল সার্ভিস বকেয়া

ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হানা কালেকশন এজেন্সির

by

মেডিকেল সার্ভিসের বকেয়া আদায়ে সরাসরি গ্রাহকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হানা দিচ্ছে কালেকশন ডিপার্টমেন্ট। অ্যাকাউন্ট থেকে গ্রাহকের অজান্তেই নিয়ে যাচ্ছে অর্থ। সেবা গ্রহণকারীর কষ্টের জমানো অর্থ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, স্বাস্থ্যসুবিধা গ্রহণকারীদের অবহেলার কারণে কালেকশন ডিপার্টমেন্ট এমন করতে পারছে। এমন করে অর্থ যাতে আর খোয়াতে না হয়, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন কমিউনিটি নেতারা। 

গত মঙ্গলবার ব্রুকলিনের ইফতেখার আলম সকালে ব্যাংকের এটিএম থেকে প্রয়োজনীয় ডলার উত্তোলন করতে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন তার অ্যাকাউন্টে ওঠানোর মতো ডলার জমা নেই। তখন তিনি কাস্টমার সার্ভিসে কথা বলেন। কাস্টমার সার্ভিস থেকে তারা জানান, কালেকশন ডিপার্টমেন্ট তার অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে ১৬ হাজার ডলার নিয়ে গেছে।

পরে তিনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ডলার নেওয়ার বিষয়ে কালেকশন ডিপার্টমেন্টের কাছে জানতে চান। তারা জানায়, ২০১২ সালে ইফতেখার আলম হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। সে সময়ের বকেয়া বিল ছিল ২১ হাজার ডলার। সেই বিল পরিশোধের জন্য বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়েছিল কালেকশন ডিপার্টমেন্ট। ইফতেখার সে চিঠির বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করিনি। ফলে কালেকশন ডিপার্টমেন্ট এক তরফাভাবে আদালতের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ আদায়ের আদেশ গ্রহণ করতে পেরেছে। ইফতেখার জানান, সে সময়ে তাঁর মেডিকেল ইনস্যুরেন্স ছিল না। মেডিকেল ইনস্যুরেন্স থাকলে আজ এ সর্বনাশ হতো না। 

২০১৪ সালের ঘটনা। কলিম উদ্দিন নামের এক প্রবাসীর মেডিকেল সার্ভিস বকেয়া ছিল ৩০ হাজার ডলার। এর ৫ বছর পর ২০১৯ সালে বাড়ি কেনার জন্য ৫০ হাজার ডলার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রাখেন কলিম। সেখান থেকে কালেকশন ডিপার্টমেন্ট পুরো ৩০ হাজার ডলার নিয়ে যায়। পরে তার আর বাড়ি কেনা আর হয়ে ওঠেনি। কলিম জানান, ‘পাওনা ডলারের বিষয়ে কালেকশন ডিপার্টমেন্ট আমাকে বেশ কয়েকটি চিঠি দিয়েছিল। আমি তার কোনো উত্তর দেয়নি। পরে তারা আমাকে চিঠি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমি মনে করেছি, আমার কাছে পাওনা তারা মওকুফ করে দিয়েছে। অথচ পাঁচ বছর পর আমি জানতে পারলাম তারা আমার বিল মওকুফ হয়নি। কালেকশন এজেন্সি ৩০ হাজার ডলার নিয়ে গিয়ে আমার জীবনের ছন্দপতন করে দিয়েছে।’

কমিউনিটি নেতা কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন জানান, কালেকশন ডিপার্টমেন্টের চিঠি পাওয়ার পরপরই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং করণীয় জানতে হবে। চিঠির বিষয়ে অবহেলা করা ঠিক না। আর ব্যাংক থেকে গ্রাহকের ডলার তখনই নিয়ে যায় যখন কোর্ট থেকে রায় থাকে। অন্যথায় কোনো অবস্থায় গ্রাহকের ডলার নিয়ে যাওয়ার কোনো নিয়ম নেই।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে কালেকশন ডিপার্টমেন্ট কয়েক শ গ্রাহকের ডলার ব্যাংকে হানা দিয়ে নিয়ে যায়। এতে করে অনেকেই আর্থিক ভাবে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। একবার আদালতের নির্দেশ পেয়ে গেলে কালেকশন বিভাগের খড়্গ থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ ঝামেলার।