অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর ভোলার উপকূলীয় চরাঞ্চল
by সময় সংবাদশীতপ্রধান অঞ্চল থেকে আসা অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর ভোলার উপকূলীয় চরাঞ্চলগুলো। শীতের সকাল-বিকেল অতিথি পাখির কিচির মিচির, উড়ে বেড়ানো আর জলকেলি দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। তবে চারণভূমিতে জনবসতি ও গোচারণের কারণে নির্বিঘ্নে বিচরণ করতে পারছে না পাখিরা। বন্ধ হচ্ছে না ফাঁদ ও বিষটোপ দিয়ে পাখি নিধন।
পূর্ব আকাশে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ভাটায় জেগে ওঠা নতুন চরগুলোতে ছুটে আসতে থাকে পাখির ঝাঁক। ব্যস্ত হয়ে পড়ে সারাদিনের খাবার সংগ্রহে। জোয়ার আসার আগেই দিনের আহার শেষে কিছু পাখি ওইসব চরে বিশ্রাম নিলেও নিরাপত্তার জন্য কিছু পাখি ছুটে যায় পার্শ্ববর্তী ম্যানগ্রোভ বাগানে। শীতের শুরু থেকেই এমন চিত্র দেখা যায় ভোলার সাগর কুলের চরকুকরি মুকরি, চর শাহজালাল, চরশাজাহান, আন্ডার চর, চর পিয়াল, আইলউদ্দিন চর, চরনিজাম, দমার চর, ডেগরারচরসহ মেঘনা-তেঁতুলিয়ার মধ্যবর্তী চরগুলোতে। দূর দূরান্ত থেকে আসা এসব অতিথি পাখি একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে অন্যদিকে মন কেড়ে নিচ্ছে পর্যটক আর প্রকৃতিপ্রেমিদের।
এ দেশে আসা অতিথি পাখির বেশির ভাগই দেখা যায় ভোলার কুকনি মুকরিতে। আর এসব অতিথির নিরাপত্তার জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন চরকুকরি মুকরির চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন।
তিনি বলেন, পাখির জন্য বাগানের মধ্যে আমি প্রায় এক হাজার হাঁড়ি সংযোজন করেছি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ভোলার বিভিন্ন চরে পাখি গণনা করা হয়। তাদের গণনায় গত বছরের তুলনায় এ বছরের জানুয়ারিতে পাখি কিছুটা কম দেখা গেছে।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সহ-সভাপতি সামিউল মেহসানিন বলেন, পাখি কিছুটা কম। আশা করা যায় ফেব্রুয়ারিতে পাখির বিচরণ বাড়বে।
পর্বতবিজয়ী ও বার্ড ক্লাবের সদস্য এম এ মুহিত বলেন, মানুষের অবাধ বিচরণ বন্ধ করে কিছু চর রক্ষা করা সম্ভব।
পাখি ধরা বন্ধ ও অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে এলাকা ভিত্তিক টহলবৃদ্ধিসহ নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা জানালেন ভোলার উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাড়াতে আমরা বিশেষ টিম গঠন করেছি।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের পর্যবেক্ষণে এ বছর ১৯টি চরে ৬২ প্রজাতির প্রায় ৪০ হাজার পাখি দেখা গেছে। আর ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দেখা গেছে ৬৫ প্রজাতির ৪৭ হাজার ৫শ’ পাখি।