ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে পারলেন না অভিজিতের বাবা অজয় রায়

http://www.dailyjanakantha.com/files/201912/1575908205_26.jpg

অনলাইন রিপোর্টার ॥ ছেলে জঙ্গি হামলায় নিহত হওয়ার পর ভেঙে গিয়েছিল মন, সেই শোক সইতে না পেরে স্ত্রীও মারা গিয়েছিলেন বছরখানেক আগে। অভিজিৎ রায় হত্যার বিচার শেষ হওয়ার আগেই চিরবিদায় নিলেন তার বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ও।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের পরিচালক শহীদুল হক মল্লিক জানান।

শিক্ষা আন্দোলনের অগ্রপথিক, পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক,মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২৫ নবেম্বর থেকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অধ্যাপক অজয় রায়। ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট বাড়লে দুইদিন পর থেকে তাকে কৃত্রিম শ্বাস দেওয়া হচ্ছিল।

শিক্ষা আন্দোলন মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অজয় রায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অবসরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইউজিসি অধ্যাপক ছিলেন অজয় রায়। একুশে পদকপ্রাপ্ত এই পদার্থবিদের দুটি গবেষণা নোবেল কমিটিতে আলোচিত হয়।

মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল ভাষা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানেও।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশের বইমেলা থেকে বেরিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন অজয় রায়ের বড় ছেলে প্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়।

সেদিন উগ্রবাদীদের হামলার শিকার হয়ে হাতের আঙুল হারান অভিজিতের স্ত্রী ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যাও।

অজয় রায়ের অসুস্থতার খবর ফেসবুকে শেয়ার করে সম্প্রতি বন্যা লিখেছেন, “কী পূর্ণ এবং স্বার্থক একটা জীবনই না কাটিয়েছেন বাবা। কিন্তু তার পরক্ষণেই মনে হলো গত পাঁচ বছরে যে কষ্ট পেয়েছেন, সেটাও তো বলার মতো না। সেই ২০১৫ থেকেই উনি যে ভেঙে পড়তে শুরু করেছেন, সেটা আর ঠিক হয়নি। এই বছরের শুরুতে অভির মা মারা যাওয়ার পর সেই ভেঙে পড়াটা শুধু তরান্বিতই হয়েছে।”