দুই সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার ঘটনায় মামলা

রংপুর নগরের বাহারকাছনা এলাকা থেকে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তাঁর দুই শিশুসন্তানের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত ওই নারীর বড় ভাই বাবু মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে নিহত বোনের স্বামী আবদুর রাজ্জাককে আসামি করা হয়।

গতকাল রোববার সকালে আসফিয়া আক্তার (৩৪), তাঁর তিন বছর বয়সী মেয়ে নেহা এবং দেড় বছর বয়সী ছেলে নিশাতের লাশ উদ্ধার হয়। আশফিয়া ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এর মধ্যে আসফিয়ার গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এ ঘটনায় আটক আসফিয়ার স্বামী অটোচালক আবদুর রাজ্জাককে (৪০) মামলার পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আবদুর রাজ্জাক বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, মূলত পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মামলার এজাহারেও এসব কথা বলা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, আবদুর রাজ্জাক দেড় বছর আগে নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাহারকাছনা হাতীবান্ধা সেতুসংলগ্ন এলাকায় জমি কিনে টিন দিয়ে একটি ঘর করে থাকতে শুরু করেন। এর আগে তাঁরা থাকতেন নগরের রেলস্টেশনের পীরপুর এলাকায়।

প্রতিবেশীরা জানান, গতকাল বেলা ১১টার দিকে প্রতিবেশী এক নারী রাজ্জাকের বাড়িতে গিয়ে কারও সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের ভেতর দুই শিশুসন্তানসহ গৃহবধূ আসফিয়াকে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তাঁর স্বামী আবদুর রাজ্জাকের হাতে ও গলায় রক্ত দেখে ওই নারী চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন যে আসফিয়া ও তাঁর দুই শিশু মারা গেছেন। এরপরই তাঁরা পুলিশকে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‍্যাব ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকেই আবদুর রাজ্জাককে আটক করে নিয়ে যায় র‍্যাব-১৩। লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।

নিহত আসফিয়ার ভাই আবদুর রশীদ গতকাল বলেছিলেন, প্রায় সময়ই রাজ্জাক তাঁর বোনের কাছে টাকা দাবি করতেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি (রাজ্জাক) একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কিনবেন বলে দাবি করতেন। এই টাকা না দেওয়ায় প্রায় দিনই তাঁর বোন আসফিয়াকে মারধর করতেন। সম্প্রতি রাজ্জাক ৭০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন।