ভারতের লোকসভায় ‘মুসলিমবিরোধী’ নাগরিকত্ব বিল পাস
by বিদেশ ডেস্কপ্রতিবেশি তিন দেশ থেকে যাওয়া অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে অনুমোদন দিয়েছে ভারতের পার্লামেন্ট। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নিম্নকক্ষ লোকসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিলটি উত্থাপন করেন। ৯০ মিনিট উত্তপ্ত বিতর্কের পর ২৯৩-৮২ ভোটের ব্যবধানে এটি পাস হয়। আইনে পরিণত হতে হলে বিলটির এখন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার অনুমোদন পেতে হবে। তবে সেখানে ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় বিলটির ভবিষ্যত অনিশ্চিত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বিলটিকে ‘মুসলিমবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
৪ ডিসেম্বর ভারতে অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে একটি খসড়া বিলে অনুমোদন দেয় দেশটির মন্ত্রিসভা। বাংলাদেশ,পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে শরণার্থী হওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে এ বিলটি আনা হয়। এর আগে ২০১৬ সালে একবার পার্লামেন্টে এ বিলটি লোকসভার অনুমোদন পেলেও রাজ্যসভার অনুমোদন পেতে ব্যর্থ হয়। তখন আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলজুড়ে বিলটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়।
সোমবার বিজেপি সরকার পার্লামেন্টে বিলটি তোলার পরও ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিলটির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা এতে করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী ভারতে প্রবেশ করবে।
নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের মাধ্যমে ভারতের ৬৪ বছরের পুরাতন নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৯৫৫ সালের ওই আইনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব পেতে হলে ভারতে থাকতে হবে ১১ বছর। তবে সংশোধিত বিলে বলা হয়েছে, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা যদি প্রমাণ করতে পারে তারা পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে এসেছে তাহলে হলে তারা পাঁচ বছরেই আবেদন করতে পারবে।
বিজেপি সরকার বলছে, এই বিল পাশের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত মানুষের আশ্রয়স্থল হবে ভারত। তবে সমালোচকদের মতে বিজেপি’র মুসলমান জনগোষ্ঠীকে কোনঠাসা করার নীতির অংশ হিসেবেই পার্লামেন্টে বিল তোলা হয়েছে।