রাতের অন্ধকারে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যায় গফরগাঁও থেকে

আজ গফরগাঁও মুক্ত দিবস

by

১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর গফরগাঁওয়ের মুক্তিকামী মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পান। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বিমুখী ধাওয়া খেয়ে পাক হানাদার বাহিনী তাদের দোসর রাজাকার-আল বদরদের ফেলে রাতের অন্ধকারে গফরগাঁও থেকে পালিয়ে যায়। ৯ ডিসেম্বর প্রত্যুষে গফরগাঁওয়ের সর্বস্তরের মানুষ বিজয় আনন্দে মেতে উঠেন। ফলে এই দিনটিকে গফরগাঁও মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বেলাল আহম্মেদ স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। ১৭ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী হঠাৎ আকাশ ও স্থল পথে গফরগাঁও বাজার ও রেলষ্টেশনে হামলা করে। এ হামলায় গফরগাঁওয়ের চার শতাধিক মুক্তিকামি মানুষ শহীদ হন।

৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে গফরগাঁওয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর সাথে অনেক বার সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ন হয়ে বিজয় অর্জন করেছেন। দেশব্যাপী চুড়ান্ত বিজয়ের পূর্বলগ্নে ৮ ডিসেম্বর আফসার বাহিনীর কম্পানি কমান্ডার সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা ভালুকার দিক থেকে এবং ইকবাল-ই-আলম কামাল বাহিনীর সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা পাইথলের দিক থেকে পাক হানাদার বাহিনীকে পিছু ধাওয়া করে

এ অবস্থায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ থেকে বাঁচতে হানাদাররা নিরস্ত্র শতশত নারী-পুরুষ-শিশুকে মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করে পিছু হটে উপজেলা সদরে অবস্থিত ডাকবাংলো ও জন্মেজয় জমিদার বাড়িতে ক্যাম্পে অবস্থান নেয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকার, আল-বদর, আল-সামসরা প্রাণ বাঁচাতে পাক-হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়।

৮ ডিসেম্বর দিবাগত গভীর রাতে পাক সেনারা তাদের দোসর রাজাকার-আল বদরদের ঘুমের মধ্যে রেখেই ট্রেনযোগে পালিয়ে যায়। ৯ ডিসেম্বর প্রত্যুষে এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ রাস্তায় নেমে বিজয় আনন্দে মেতে উঠেন এবং গফরগাঁও হানাদার মুক্ত হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধা-জনতা হানাদার ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রাজাকার-আল বদরদের হাত পা বেধে গরুর গাড়িতে করে লামকাইন মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

গফরগাঁও মুক্ত দিবস উপলক্ষে আজ উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে র‌্যালী, আলোচনা সভা ও লঞ্চঘাটা বদ্ধভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পনের কর্মসূচি রয়েছে।