আমতলীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে, নীরব প্রশাসন

by

বরগুনার আমতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ‘বোমা’ (ড্রেজার) মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে স্থানীয়রা। এতে একদিকে যেমন সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, তেমনি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এলাকার রাস্তা-ঘাট, জমি, গাছপালা ও বিভিন্ন স্থাপনা। তাদের এমন অবৈধ কাজ দেখার মতো কেউ নেই। নীরব ভূমিকা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী সড়ক, কালভার্ট, বিভিন্ন স্থাপনার সর্বনিম্ন এক কিলোমিটারের মধ্যে নদী, খাল ও পুকুর থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা যাবে না। অথচ খলিয়ান বাস স্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে কেএবি বিক্সস সংলগ্ন কালভার্টের সামনে কলংক খালে ৫০ থেকৈ ৬০ গজের মধ্যে আমতলী-কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশ থেকে অবৈধভাবে  ‘বোমা’ (ড্রেজার) মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। হাবিব নামের এক ব্যক্তি ওই খাল থেকে বালু উত্তোলন করে। বর্তমানে একই খাল দিয়ে অবৈধ বোমা মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে মেঘমালা ফিলিং স্টেশনের মধ্যে ফেলছেন আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তুহিন নামে এক ব্যক্তি।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার আমতলী, হলদিয়া, চাওড়া, গুলিশাখালী, আঠারোগাছিয়া, ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচটি অবৈধ বোমা মেশিন রয়েছে। এ সকল মেশিনগুলোর মালিকরা উপজেলার বিভিন্নস্থানে ঘুরে ঘুরে গ্রামের পরিত্যাক্ত খাল, ডোবা ও পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোমা মেশিন মালিকরা জানান, নিচু জমি ভরাট, বাসা-বাড়ি ও নির্মাণ কাজসহ বিভিন্ন কাজের জন্য স্বল্প খরচে বালু উত্তোলন করে তা বিক্রি করেন। দাম নির্ভর করে দূরত্বের ওপর। গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা ও বিভিন্ন স্থাপনা তৈরির কাজে ঠিকাদারেরা তাদের মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করেন। সেটা প্রশাসনের বড় স্যারেরা দেখেন। কিন্তু কোনোদিন বলেননি বোমা মেশিন অবৈধ। এই ধরনের মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা যাবে না। 

পরিবেশ বিষয়ক আইনি সংস্থা ‘বেলা’ বরিশাল অফিসের কর্মকর্তা লিংকন বায়েন জানান, বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। বালু উত্তোলন করতে হলে সরকার স্বীকৃত নির্ধারিত বালু মহাল থেকে তা উত্তোলন করতে হয়। পুকুর বা ডোবা থেকে বালু উত্তোলনের সময় সেখানে যে শূন্যস্থান তৈরি হয় তার কারণে আশপাশের ভূমি বা ভূমিতে অবস্থিত রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমি, গাছপালা ও বিভিন্ন স্থাপনা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন বলেন, অবৈধ বোমা (ড্রেজার) মেশিন দিয়ে যদি কেউ বালু উত্তোলন করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।