https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2019/11/29/831d9d1fefa7c77d233641bea3418e53-5de0f97f9cc62.gif
অভিষেক অনুষ্ঠানে শপথবাক্য পাঠ করছেন বিয়ানীবাজার সমিতির নতুন কমিটির সদস্যরা

বিয়ানীবাজার সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক

by

দেশের সমৃদ্ধ উপজেলা সিলেটের বিয়ানীবাজার। বিয়ানীবাজারের লোকজন দেশের মতোই প্রবাসে এগিয়ে আছেন নিজেদের বৈশিষ্ট্যের কারণে। ভ্রাতৃত্ববোধ আর ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ বিয়ানীবাজারের লোকজন সময়ের সঙ্গে যেমন নিজেদের এগিয়ে নিয়েছেন, তেমনি দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
২৪ নভেম্বর ওজন পার্কের দেশি সিনিয়র সেন্টারে বিয়ানীবাজার সমিতির নতুন কমিটির চুনই-রুহুল পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল। প্রথম পর্বে বিদায়ী সভাপতি মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে নতুন কমিটি চুনই-রুহুল পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। অভিষেকের প্রথমে নবনির্বাচিত সভাপতি মকবুল রহিম চুনইকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুস শহীদ মাস্টার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন—কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আলিম, কমরুদ্দিন ও রিজু মোহাম্মদ।
পরে অভিষিক্ত সভাপতি মকবুল রহিম চুনইর সম্মতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংগঠনিক ১২ সদস্যকে শপথবাক্য পাঠ করান। ১৫ জনের মধ্যে সদস্য চৌধুরী শিমুল ও এমদাদ অনুপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বর্তমান সভাপতির অনুরোধে বিদায়ী সভাপতি সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাবেক সেক্রেটারি মুহিবুর রহমান রুহুল। তাঁকে সহযোগিতা করেন সাবেক সেক্রেটারি ও বর্তমান সহসভাপতি শামীম আহমেদ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন নিউজার্সি থেকে আগত অধ্যাপক আবদুস শহীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমদ, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী, সাবেক সভাপতি বদরুন নাহার খান মিতা, প্যাটারসন সিটির দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলম্যান শাহীন খালিক, বিয়ানীবাজার সমিতির উপদেষ্টা বদরুল হক, ছমির উদ্দিন, আবদুল হক মনিয়া, সমিতির সাবেক ও প্রথম নির্বাচিত সভাপতি আবদুল রাজ্জাক, সাবেক সেক্রেটারি আজমল হোসেন কুনু, বুরহান উদ্দিন কপিল, আজিজুর রহমান বুরহান, মাসুদুল হক ছানু, মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী, সাবেক উপদেষ্টা ও অভিষিক্ত সভাপতি মকবুল রহিম চুনই।
আলোচনার আগে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা রফিক উদ্দিন। এরপর বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। পরে ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, বিয়ানীবাজার সমিতির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত যাদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা পর্বে অভিষিক্ত সভাপতি মকবুল রহিম ১৯৮৭ সাল থেকে বিয়ানীবাজার সমিতির প্রতিষ্ঠার জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। সম্প্রতি বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক সাহাবুদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, বিয়ানীবাজারবাসীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও তিন দশকে সমিতিতে কোনো ভাঙন ধরেনি। বিয়ানীবাজার সমিতি নতুন নেতৃত্বে বিশ্বাস করে। সমিতিতে ৬০ ভাগ নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি রয়েছেন।
মকবুল রহিম বলেন, গত কমিটির নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল সমিতির ভবন মুক্ত করা। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন, তাঁর দায়িত্ব থাকা অবস্থায় এই সমিতি ঋণ মুক্ত হবে।
অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আবদুস শহীদ সমিতির সবাইকে মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিদায়ী সভাপতি মোস্তফা কামাল গত দুই বছর কার্যকালে সাবেক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সাহায্য ও সহযোগিতার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, সমিতির ভবনকে ঋণ মুক্ত করতে না পারলেও ঋণ মুক্তির দোরগোড়ায় নিয়ে এসেছেন।
গ্রীষ্মকালীন বনভোজনের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই আয়োজন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তিনি নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আশা করি তাঁরা সংগঠনকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাবেন।
নতুন সভাপতিকে তিনি ক্রেস্ট প্রদান করেন পেনসিলভানিয়ার বিয়ানীবাজার সমিতির সভাপতি মাশুকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে পঞ্চখণ্ডের ইতিকথা নামে একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি আবদুস শহীদ। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন মোহাম্মদ আলিম উদ্দিন, শাই মাহবুব ও রোক্সানা মির্জা।
অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়।