ঢাকা-নিউইয়র্ক শিক্ষা বিনিময়ের উদ্যোগ
by উত্তর আমেরিকা অফিসবাংলাদেশ সফর করে অভিভূত নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পাঁচ সিনেটর। ওই সফরের পর শিগগিরই তাঁরা শুরু করতে যাচ্ছেন নিউইয়র্ক-ঢাকা শিক্ষাবিনিময় কর্মসূচি। সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক ও স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের সঙ্গে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেতুবন্ধন তৈরির লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সফর নিয়ে ২৪ নভেম্বর ব্রঙ্কসে বাংলাদেশ সফরকারী পাঁচ সিনেটর এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এতে তাঁরা এই ঘোষণা দেন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পাঁচজন সিনেটর লুইস সেপুলভেদা, জন ল্যু, জেমস স্কুফিন, লিয়র কমরি ও কেভিন এ পার্কার বাংলাদেশ সফর করেন। জেমস স্কুফিন বাদে বাকি চারজনের রাজ্য সিনেট নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশি কমিউনিটির আধিপত্য ক্রমশই বাড়ছে।
বাংলাদেশি ভোটারদের সঙ্গে সেতুবন্ধন বাড়ানোর লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে তারা বাংলাদেশ সফর করেন।
সফরকালে সিনেটররা স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামসহ রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও সিলেট চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এ সময় উভয়পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানোর পাশাপাশি নিউইয়র্কের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাত নিয়ে আলোচনা করেন।
সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশ সফরের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর লুইস সেপুলভেদা, জন ল্যু ও লিরয় কমরি। বাংলাদেশে আতিথেয়তার প্রশংসা করে এই সফরকে তাঁদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সফর বলে উল্লেখ করে বলেন, এই সফর তাঁদের চিরদিন মনে থাকবে। তাঁরা বারবার বাংলাদেশ সফর করবেন বলেও আশা করেন।
সিনেটর লিরয় কমরি ঢাকার যানজটের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম দেখার পর তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নিউইয়র্কের ট্রাফিক জ্যাম নিয়ে তিনি আর কোন অভিযোগ করবেন না। বাংলাদেশে নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের কথা উল্লেখ করে কমরি বলেন, তিনি আশা করেন উন্নয়ন কাজ শেষ হলে ঘনবসতি ঢাকার মানুষ ট্রাফিক জ্যাম থেকে মুক্তি পাবে।
সংবাদ সম্মেলনে সেপুলভেদা বলেন, বাংলাদেশ সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল, নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের আরও ভালোভাবে মূল্যায়ন করার সুযোগ সৃষ্টি করা। সেদিক থেকে তাদের সফর সফল হয়েছে। তিনি বলেন, সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক ও স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটকে যুক্ত করে শিক্ষাবিনিময় কর্মসূচি চালুর রূপরেখা প্রণয়ন চলছে। এতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এ দেশে আসতে ও নিউইয়র্কের অন্যান্য কমিউনিটির শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে গিয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে। এটাই তাদের লক্ষ্য। সেপুলভেদা সাংবাদিকদের বলেন, আগামী বছরের ২৬ মার্চ ‘বাংলাদেশ দিবস’-এ বাংলাদেশিদের জন্য সারপ্রাইজ (চমক) আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি লিডার, ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, আবদুর রহিম হাওলাদার। তাঁরা সিনেটরদের বাংলাদেশ সফরসঙ্গী ছিলেন। তারাও এ সময় ওই সফরে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রহিম ২০২০ সালে ‘বাংলাদেশ ডে’ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে সিনেটর লুইস সেপুলভেদার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ছবি: এম বি তুষার