১১ দফা বাস্তবায়নের দাবি
শুক্রবার মধ্যরাত থেকে নৌযান ধর্মঘট
by বরিশাল অফিসনৌযান শ্রমিকরা আজ শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ধর্মঘট শুরু করবেন। ফলে যাত্রীবাহি ও পণ্যবাহীসহ সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। ১১ দফা দাবি আদায়ে নৌযান শ্রমিকদের ৮টি সংগঠনের জোট বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এ ধর্মঘট আহ্বান করেছে। এ নিয়ে গত এক বছরে ৩ বার ধর্মঘটের ডাক দিল ফেডারেশন।
নেতৃবৃন্দের দাবি, নৌযান মালিক ও সরকার বার বার ওয়াদা ভঙ্গ করায় তারা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এবার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করবেন না। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করা হলেও তাদের মূল দাবি হচ্ছে, ২০১৬ সালে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী সকল স্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহআলম ভূইয়া বৃহস্পতিবার বিকালে বলেন, ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তারা ৩ বার ধর্মঘটে গেছেন। প্রতিবারই শ্রম মন্ত্রাণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করানো হয়। পরবর্তীতে নৌযান মালিকরা দাবিগুলো মেনে নেন না।
শাহ আলম ভূইয়া বলেন, এবারও ধর্মঘট বন্ধ করতে বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সভা হয়। সেখানে অয়েল ট্যাংকার মালিক ছাড়া অন্য নৌযানের মালিক প্রতিনিধিরা আসেননি। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেডারেশনভুক্ত সকল সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করেছেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাত্রীবাহিসহ সব নৌযানের মালিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতি ছাড়া শ্রম মন্ত্রাণালয়ের সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠক কিংবা দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস শ্রমিকরা মানবেন না।
ফেডারেশনের ১১ দফা দাবিগুলো হচ্ছে- নৌপথে চাঁদাবাজী বন্ধ, ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সকল স্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রদান, মালিক কর্তৃক খাদ্যভাতা প্রদান, নৌযান শ্রমিকদের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ, এনড্রোজ-ইনচার্জ ও টেকনিক্যাল ভাতা প্রদান, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ, সকল শ্রমিককে নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান, নদীপথে প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় বয়া-বিকন-বাতি-মার্কা স্থাপন এবং নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সকল অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রারি বন্ধ করা।
এদিকে, ধর্মঘট সফল করতে দেশের অন্যতম বৃহৎ নৌবন্দর বরিশালে ব্যাপক প্রস্ততি নিয়েছেন নৌযান শ্রমিকরা। তারা গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল নৌবন্দরে বিক্ষোভ করেন। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল জেলা সভাপতি হাশেম মাস্টার জানান, তারা ধর্মঘটের সমর্থনে বিক্ষোভ, লিফলেট বিতরণসহ নানাভাবে প্রচারনা চালাচ্ছেন। আজ শুক্রবার সকাল ও বিকালে নৌবন্দরে বিক্ষোভ করা হবে।