https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2019/11/29/1e815329c34e42c4fa7fd7a0cd12b233-5de0ebcf69747.gif
থ্যাংকস গিভিং ডের আড্ডায় উপস্থিত সাংবাদিক ও অতিথিদের একাংশ। ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার ‘থ্যাংকস গিভিং’ আড্ডা

by

থ্যাংকস গিভিং যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক সামাজিক সাংস্কৃতিক উৎসব। আগামী বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে এই উৎসব উদযাপন করা হবে। অনেক অফিস আদালতে এর মধ্যেই স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার থ্যাংকস গিভিং ডে উদযাপন করা হচ্ছে।
লং উইকএন্ডে অনেকে দূর দূরান্তে চলে যান। পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়ে উৎসব করেন। কিন্তু সহকর্মী ও সতীর্থদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ বিনিময়ের সুযোগ তাঁরা হারাতে চান না। তাই এই আগাম আয়োজন।
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা স্থানীয় সময় ২১ নভেম্বর বিকেলে এই দিনটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছিল। ছোট্ট পরিসরে হলেও প্রথম আলোর বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে ছিল আড্ডার আয়োজন। উদ্দেশ্য সবাইকে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এই দিনটি উদযাপন করা।
এই উপলক্ষে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আজকের আড্ডায় যারা এসেছেন তাদের প্রতি আমার অশেষ ভালোবাসা এবং বিশেষ ধন্যবাদ। যারা আসতে পারেননি তাদের প্রতিও রইল শুভকামনা। আসুন আমরা পরস্পরকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমাদের প্রবাস জীবনকে আরও সুন্দর ও বন্ধুত্বপূর্ণ করে তুলি।’
ইব্রাহীম চৌধুরী এর ফাঁকে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার নতুন উদ্যোগ ‘উত্তরের পথে’ নিয়ে কথা বলেন। নিউইয়র্কের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংযোগের জন্য কাজ করা টিমকে তিনি পরিচয় করিয়ে দেন। পাশাপাশি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় উত্তরের নকশার দ্বিতীয় বার্ষিকী নিয়ে জম্পেশ অনুষ্ঠানের আগাম কিছু তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয় সবাইকে।
থ্যাংকস গিভিং ডিনার শুরু হয় বিকেল ৫টায়। চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। বাঙালি এই আড্ডায় আমেরিকান থ্যাংকস গিভিংকে অনুসরণ করা হলেও প্রাধান্য পায় ট্রাডিশনাল বাঙালি খাবার। প্রথম আলোর কর্মী, অতিথি, ও বন্ধুদের আনা হোমমেইড খাবার পরিবেশিত হয় অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে। সবাই একে অন্যের খাবারের স্বাদ গ্রহণ করে। পরস্পরকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা জানায়।
অনুষ্ঠানে বরাবরের মতোই উপস্থিত থাকেন অনেক চেনা মুখ। চেনা মুখের ভিড়ে উঁকিঝুঁকি দিতে দেখা যায় অনেক নতুন আসা অচেনা মুখও। কিন্তু প্রথম আগমনেই তারা বন্ধু বনে যান সবার।
নেপাল থেকে গুরু মিত্র নিয়ে এসেছিলেন বিশেষ টুপি। নেপালের সংস্কৃতিতে এ টুপি পরিয়ে নাকি সম্মান জানাতে হয়। গুরু মিত্র নিউইয়র্কে বসে কুষ্ঠী গণনা করেন। সবার হাত দেখে, কুষ্ঠী গণনা করে ভাগ্য বলেন তিনি।
আড্ডায় ছিলেন আলোকিত মানুষ আসমা বেগম। তিনি তাঁর সুললিত কণ্ঠে সংগীত পরিবেশন করে শোনান উপস্থিত সবাইকে। দেশ থেকে এসে প্রথম আলো আড্ডা আয়োজনে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান ইব্রাহীম চৌধুরী।
আড্ডা ও ভোজন পর্বে উপস্থিত ছিলেন, সুব্রত বিশ্বাস, মাহফুজুর রহমান, ইশতিয়াক রূপু, আবদুস শহীদ, রূপা খানম, সীমু আফরোজা, রহমান মাহবুব, নাবিলা রহমান, মাহমুদুল হক চৌধুরী, রোকেয়া দীপা, সালেম সুলেরী, হেলাল খান, শাহেদ আলম, সানজিদা আলম, শেলী জামান খান, সৈয়দ আফতাব আহমেদ, আছমা বেগম, শাহীনা বেগম, মনোয়ারুল ইসলাম, রওশন হক, মনিজা রহমান, সেলিনা আক্তার, তোফাজ্জল লিটন, মোহাম্মদ মনজুরুল হক, নীরু নীরামামুনুর রশীদ চৌধুরী, রেশমা চৌধুরী প্রমুখ।

https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/1600x0x0/uploads/media/2019/11/29/118d2f6a3cc3461d7ad1ac4262c259e2-5de0ec3516581.gif
থ্যাংকস গিভিং ডে উদযাপন করছে প্রবাসীরা। ছবি: প্রথম আলো

আড্ডা আলাপ আর ভোজের ফাঁকে গান গেয়ে শোনান দেশ থেকে আসা আলোকিত নারী আসমা বেগম। লেখক, সাংবাদিকদের জম্পেশ আড্ডায়, নানা সুখাদ্যের সুঘ্রাণে আমোদিত ছিল প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার প্রাঙ্গণ। তারপর শুরু হয় কর্মক্লান্ত নগরবাসীর ঘরে ফেরার তাড়া। দ্রুত নেমে আসে আরেকটি শীতের সন্ধ্যা উত্তর আমেরিকার নিউইয়র্ক নগরীতে।
আমেরিকানরা বিশেষভাবে বিশেষ একটি দিন বেছে নিয়েছে বন্ধুবান্ধব, পরিবার ও পাড়া প্রতিবেশীকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য। এর পেছনে আছে কিছু ঐতিহাসিক গল্প। ইতিহাস প্রিয় আমেরিকানরা যুগ যুগ ধরে লালন করে আসছে তাদের পূর্ব পুরুষদের ইতিহাস। এই গল্প তাদের পিতামহ, প্রপিতামহের গল্প। কী করে তারা ভাগ্যান্বেষণে ইউরোপের মাতৃভূমি ছেড়ে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে এই মার্কিনমুল্লকে এসে ঠাঁই নিয়েছিলেন। আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ানদের সঙ্গে সখ্য গড়ে শক্ত ঘাঁটি তৈরি করে বসতি গড়েছিলেন। কীভাবে উদার আদিবাসীরা বন্য টার্কি শিকার করে ভোজ দিয়ে সদ্যাগত ব্রিটিশদের আপ্যায়ন করেছিল। দিয়েছিল নিঃশর্ত বসবাসের অধিকার। এইসব ইতিহাস সবারই কমবেশি জানা। তাই অতীতমুখী আমেরিকানদের মতো এই আমেরিকান জীবনে অভ্যস্ত প্রবাসীরাও কম বেশি সবাই এই বিশেষ দিনটি পালন করে থাকেন। উৎসব উদযাপনে থাকে নৈশভোজের আয়োজন। অন্যান্য ট্রাডিশনাল খাবারের সঙ্গে সুবিশাল একটি টার্কি রোস্ট সেন্টার পিস হিসেবে খাবার টেবিলের শোভাবর্ধন করে। এটাই রীতি। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার থ্যাংকস গিভিং অনুষ্ঠানেও এমন আমেজ ছিল।